বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের সংক্ষিপ্ত জীবনী কেন তাকে বিদ্রোহী কবি বলা হয় বিস্তারিত জানুন

বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের সংক্ষিপ্ত জীবনী এবং কেন তাকে বিদ্রোহী কবি বলা হয় সেই সকল বিষয় সম্পর্কে আজকের এই পোস্টে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। আমরা জানবো কাজী নজরুল ইসলামকে বিদ্রোহী কবি উপাধি দেন কে।

বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের সংক্ষিপ্ত জীবনী


বিশ্ব সভ্যতার মাঝে বাংলা সাহিত্য কে এক নতুন রূপ দেয়ার ক্ষেত্রে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে এই সাহিত্যিক। বিশ্বজুড়ে আজও তার সাহিত্য গবেষণা করা হয়। তিনি তার সাহিত্যে বিশ্বের সকল মানুষের মানবতার পথে চলার আহ্বান করেছেন।

পোস্ট সুচিপত্রঃ  বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের সংক্ষিপ্ত জীবনী যা যা জানবেন

ভূমিকা 

বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম একজন সুশীল শিক্ষা এবং আধ্যাত্মিক জ্ঞানের অধিকারী ছিলেন। তিনি তার লেখনিত যা প্রকাশ করেছেন যা মানুষকে আজও মুগ্ধ করে। অনেক ক্ষেত্রে তিনি তার চেতনার যে যুদ্ধ বিষয় ছিল তা বিদ্রোহের ভাষায় তার লেখনিত প্রকাশ করতেন। তার জীবন শুরু হয়েছিল সাধারণ পরিবেশে। তিনি স্কুলের পড়াশোনা করার সময় ১৯১৭ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশ ভারতীয় সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়েছিলেন। 

তিনি ছিলেন মুসলিম পরিবারের তবে তার ইসলামী শিক্ষাদীক্ষায় তিনি ছিলেন অনেক বড় মাপের ধর্মনিরপেক্ষ মানুষ। তিনি ভদ্র সভ্য এবং ধর্মনিরপেক্ষ সত্তার অধিকারী ছিলেন। পাশাপাশি তার মধ্যে জেগে উঠেছিল এক অন্যরকম বিদ্রোহী সত্তা যার বিদ্রোহী ভাষা অনেক মানুষের হৃদয়কে কম্পিত করে তোলে। ১৯২২ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশ সরকার তাকে রাজদ্রোহী অপরাধে কারাদণ্ড দিয়েছিল। 

তখন তিনি ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের অধীনে অবিভক্ত ভারতের বিদ্রোহ কবি হিসেবে পরিচিত হয়েছিলেন। বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের সুগঠিত দেহ ও অপরিমেয় স্বাস্থ্য এবং প্রাণ ভরা হাসি মুগ্ধ করেছে প্রতীকটি মানুষ কে। তবে দুর্ভাগ্যবশত তিনি ১৯৪০ খ্রিস্টাব্দে কঠিনভাবে স্নায়বিক সমস্যায় আক্রান্ত হয়ে পড়ে। তারপর থেকে দীর্ঘ ৩৪ বছর তাকে সম্পূর্ণ সাহিত্য চর্চা থেকে বিচ্ছিন্ন থাকতে হয়। 

তবে জানা যায় বাংলাদেশ সরকারের প্রয়োজনে ১৯৭২ খ্রিস্টাব্দে তাকে তার সপরিবারে কলকাতা শহর থেকে ঢাকাতে স্থানান্তর করা হয়। সে সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ১৯৭৫ সালের দিকে সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিষয়ে অসামান্য অবদান রাখেন যার কারণে তাকে সম্মানসূচক ডি লিট ডিগ্রিতে ভূষিত করে। ডিলিট হলো ডক্টর অফ লেটার্স যা একাডেমিক ডিগ্রী তবে এটা একটি উচ্চতর ডিগ্রী যা বিভিন্ন দেশের ডক্টর অফ ফিলোসফির বা পি এইচ ডি এর থেকেও বেশি সম্মানজনক এবং উচ্চ মানের।

আরো পড়ুনঃ বুখারী শরীফের পূর্ণ নাম কি - বুখারী শরীফের বৈশিষ্ট্য জানুন

আবার এভাবে বলা হয় যে সায়েন্স ও সমতুল্য হিসেবে ধরা হয়। তিনি সৃজনশীলতা ও মানবিক কার্যে শিল্পকলা এবং মৌলিকভাবে বিশেষ অবদান রাখেন। শেষ ১৯৭৬ সালে তাকে বাংলাদেশের জাতীয়তা প্রদান করা হয় তারপরে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। বিশ্বসাহিত্যের বাঙালির মনকে উৎসাহ এবং আধ্যাত্মিক অনেক কিছু সন্ধান দেয় এই নজরুল ইসলামের বিশাল কাব্য সাহিত্যের মধ্যে যার গুরুত্ব অপরিসীম এবং অতুলনীয়। 

তিনি তার লেখনের ভিতরে বাংলা সাহিত্য, সমাজ ও সংস্কৃতির ক্ষেত্রে বিশেষ শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিত্ব হিসেবে অবদান রেখেছে। তিনি সারাজীবন অমানবিক, অত্যাচার ও ধর্মীয় গোড়ামীর বিরুদ্ধে তার বিদ্রোহী ভাষার কণ্ঠস্বর জাগিয়ে তুলেছে। তাই আজকে আমরা জানবো সেই বিশেষ বিদ্রোহী কোভিদ সম্পর্কে বিশেষ পরিচিতি যা বাঙালি হিসেবে আমাদের জানা উচিত কারণ সারাবিশ্বে এবং বাংলার আনাচে-কানাচে এখনো তার সাহিত্য চর্চা করা হয়।

বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের সংক্ষিপ্ত জীবনী জানুন 

বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের সংক্ষিপ্ত জীবনী সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য আজকের এই পোস্টটি সম্পূর্ণ করুন। এখানে সকল বিষয়ে বিস্তারিত উপস্থাপন করা হয়েছে। কবি কাজী নজরুল ইসলাম ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার আসানসোল মহাকুমার। এই চারুলিয়া গ্রামটি আসানসোল মহকুমার জামুরিয়া ব্লকে অবস্থিত। জামুরিয়া হলো ভারতের পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যের পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসান গোল নগরের একটি অঞ্চল। 

জামুড়িয়া হাটে প্রতিদিন বাজার বসে, এখানে নন্দী রোডে একটি সিনেমা হল আছে এর নাম প্রতিমা সিনেমা হল বর্তমানে এই অবস্থা। কাজী নজরুল ইসলামের পিতামহ কাজী আমির উল্লাহ পুত্র কাজী ফকির আহমেদ এর দ্বিতীয় স্ত্রী জায়েদা খাতুন এর ষষ্ঠ সন্তান তিনি। এখানে তার বাবা ছিলেন একজন স্থানীয় মসজিদের ইমাম এবং মাজারের খাদেম। তিনি ভাইয়ের মধ্যে কনিষ্ঠ কাজী আলী হোসেন এবং দুই বোনের মধ্যে সবার বড়। 

কাজী সাহেব জান ও কনিষ্ঠ উম্মে কুলসুম কাজী নজরুল ইসলামের ডাক নাম রাখা হয়েছিল দুখু মিয়া। সবাই তাকে এই নামে ডাকতেন। ছোটবেলা থেকে তিনি ধর্মভীরু ছিলেন এবং ধর্ম বিশ্বাসী ছিলেন। নজরুল ইসলাম গ্রামের স্থানীয় মসজিদে মুয়াজ্জিনের কাজ করতেন। সেইতো সময় তিনি মসজিদে ছোট বাচ্চাদের শিক্ষা দিতেন ইসলামের। সেখানে তিনি মুয়াজ্জিনের পাশাপাশি পুরান ইসলাম দর্শন এবং ইসলামী কর্ম তন্ত্র অধ্যয়ন করতেন। 

যখন ১৯০৮ সাল তখন তার পিতার মৃত্যুবরণ কিন্তু সেই সময় তার বয়স মাত্র ৯ বছর। পিতার মৃত্যুর পর তিনি পারিবারিকভাবে অভাব-অনটনের কারণে তার শিক্ষা জীবনে বাধাগ্রস্ত হয় এবং ১০ বছর বয়সে জীবিকা অর্জনের জন্য কাজে নামতে হয়। সে সময় তিনি মক্তব থেকে নিম্ন মাধ্যমিক পাস করে ও উক্ত মক্তবে শিক্ষকতা শুরু করেন। তিনি হাজী পালোয়ারের কবরের সেবক এবং মসজিদের মোয়াজ্জিন হিসেবে কাজ শুরু করেন। 

সে সময় তিনি ইসলামের আকিদার সাথে ছোটকালেই অনেকটা সম্পৃক্ত হয়ে যান। পরবর্তীকালে তার সাহিত্য বিপুলভাবে প্রভাবিত করে এবং তিনি বাংলা সাহিত্যে ইসলামী চেতনার চর্চা শুরু করেন। আজও তার লেখা অনেক গান, ইসলামিক গজল মানুষের মুখে মুখে শোনা যায়। কাজী নজরুল ইসলাম মক্তব মসজিদ ও মাঝারের কাজে বেশি দিন সময় দিতেন ও কম বয়সেই লোকশিল্পের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে তিনি লেটো দলে যোগ দেন যেখানে বিভিন্ন আঞ্চলিক অঞ্চলের কবিতা গানের আবৃত করা হতো। 

তার চাচা ছিলেন সেই দলের একজন বিশিষ্ট ওস্তাদ যার নাম ছিল কাজী বজলে করিম। তার চাচা ও এই ওস্তাদের পাশাপাশি মিশ্র ভাষার গান চর্চা করতেন ধারণা করা হয় তার চাচার প্রভাবে নজরুল সেই দলে যোগ দেয়। নিয়মিত বাসুদেবের লেটো ও কবি গানের আসরে নজরুল সময় দিতেন। এখানে তিনি সাহিত্য চর্চা করতেন এবং এই দলের সাথে তিনি বিভিন্ন স্থানে যেতেন তাদের সাথে অভিনয় শিখতেন অভিনয় করতেন এবং গান নাটকের কবিতা লিখতেন। 

সেই সাথে নিজ কর্ম এবং অভিজ্ঞতা আলোতে বাংলা সাহিত্য এবং জ্ঞান চর্চা শুরু করেন। ইসলাম ধর্মের পাশাপাশি হিন্দু ধর্মের ধর্মগ্রন্থ পুরান সহ বিভিন্ন অধ্যায় তিনি অধ্যয়ন করেন। তিনি অল্প সময়ে তার নাট্যদলের জন্য অনেক লোকশল্প রচনা করে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য রয়েছে সং, শকুনি বধ, রাজা যুধিষ্ঠির সং, দাতা কর্ম, আকবর বাদশা, আরো কবি কালিদাস বিদ্যা ভুতম এবং রাজপুত্রের গান। একদিকে ছিল তার মসজিদ মাজার এবং মক্তবের চর্চা উন্নতকে তিনি প্রচুর পরিমাণ সাহিত্য চর্চা করতেন লেটো দলের সমৃদ্ধ করেছে। 

আবার নজরুল ইসলাম কালি দেবীকে নিয়ে প্রচুর শ্যামা রচনা করেছেন। তিনি তার শেষ ভাষণে বলেন এভাবে উল্লেখ করেন যে, কে বলেন আমার বাণী যবন কেউ বলেন কাফের। আমি বলি দুটোর কোনটাই না। আমি শুধু হিন্দু মুসলিমকে এক করার চেষ্টা করেছি গালাগালিকে গালাগালিতে পরিণত করার চেষ্টা করেছি। আবার ১৯১০ সালের নজরুল লেটো দল ছেড়ে ছাত্রজীবনে ফিরে আসেন। লেটো জীবনে তার দলের প্রতি যে প্রতিভা ছিল তা সকলকে মুগ্ধ করে। 

ন্যাটো দল থেকে তার চলে আসার পর তার শিষ্যরা অনেক আফসোস করেন এবং তার আফসোসের দিক থেকে একটি সঙ্গীত রচনা করে সেখানে তারা বলেন আমরা এই অধীন, হয়েছি ওস্তাদ হীন, ভাবি তাই নিশিদিন নামেতে নজরুল ইসলাম। তিনি এরপর নতুন ছাত্র ও স্কুলে মাধ্যমিক উচ্চ ইংরেজি স্কুলে ভর্তি হন। পরবর্তীতে তিনি নবীন চন্দ্র ইনস্টিটিউশন নামে যা প্রতিষ্ঠান পরিচিত লাভ করে।

সেই স্কুলের প্রধান শিক্ষক ছিলেন কুমুদ রঞ্জন মল্লিক তিনি সেকালের বিখ্যাত কবি হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তার সাহিত্য নজরুলের অনুপ্রেরণার উৎস ছিল তিনি নজরুলের স্মৃতি স্মরণ করতে গিয়ে লিখেছিলেন। এর কিছু উইকিপিডিয়া থেকে সংগ্রহ করে জানালাম। সহজে যেন আপনারা সকল তথ্য খুঁজে পান। এটা হল ছোট সুন্দর চনমনে ছেলেটি, আমি ক্লাস পরিদর্শন করতে গেলে সে আগে প্রমাণ করিত, আমি হাসি আর তাহাকে আদর করিতাম লাজুক ছিল সে বড়ই। 

আরো পড়ুনঃ ইমাম আবু হানিফার জীবনী - ইমাম আবু হানিফার পীর কে ছিল জানুন

এছাড়া আর্থিক সমস্যা থাকে বেশ কিছুদিন এখানে লেখাপড়া করতে দেয়নি। ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ার পর তাকে আবার কাজে ফিরে আসতে হয়। এখানে তিনি প্রথম যোগ দেন। এরপর তিনি একজন খ্রিস্টান রেলওয়ে গার্ডেনের খানসামা এবং সর্বশেষ আসানসোলের যা রুটির দোকান বানানোর কাজ নেন। এভাবে অনেক কষ্টের মধ্যে তিনি বাল্যকাল পার করেন। বিভিন্ন দোকানে কাজ করেছেন এবং তার পরিচয় হয় একজন দারোগা শফিউল্লাহর সাথে। 

সেখানে তিনি তাকে ১৯১৪ খ্রিস্টাব্দে ময়মনসিংহ জেলার ত্রিশালের হরিরামপুর স্কুলের সপ্তম শ্রেণীতে ভর্তি করিয়ে দেন। তবে ১৯১৫ সালে তিনি আবার রানীগঞ্জের সিরালসোল রাজস্কুলে ফিরে যান। সেখানে অষ্টম শ্রেণি পাস করেন এবং ১৯১৭ সাল পর্যন্ত এখানে পড়াশোনা করেন। সে সময় সেই স্কুলে টেস্ট পরীক্ষা মাধ্যমিক টেস্ট পরীক্ষা না দিয়ে তিনি সেনাবাহিনীতে সৈনিক হিসেবে যোগ দেন। সেই স্কুলে অধ্যয়নরত অবস্থায় নজরুল চারজন শিক্ষক দ্বারা প্রভাবিত হয় এনারা হলেন অত্যন্ত উচ্চ সংগীতের সতী চন্দ্র কাঞ্জিলাল। হাফেজ নুরুন্নবী, সাহিত্য চর্চার গণেন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়, ও নিবারণ ও ঘটক। 

সংক্ষেপে তার সৈনিক জীবন সম্পর্কে কিছু কথা না বললেই নয়। তিনি ১৯১৭ সালে সেনাবাহিনীতে যোগদান ভারত উপমহাদেশের পক্ষে প্রথমে কলকাতা ফোর্ট উইলিয়াম এবং পরবর্তীতে প্রশিক্ষণের জন্য সীমান্ত প্রদেশের নওশেরায় যান। সেখানে প্রশিক্ষণ শেষে তিনি সেনাবাহিনীর সৈনিক জীবন কাটাতে শুরু করেন। ১৯১৭ থেকে ২০ সালের শেষ পর্যন্ত শেষের মার্চ এপ্রিল পর্যন্ত এই সময় তিনি ৪২ বেঙ্গল রেজিমেন্টের সাধারণ সৈনিক কার্পোরাল থেকে কোয়াটার মাস্টার হাবিল তর পর্যন্ত হয়েছিলেন।

বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের সংক্ষিপ্ত জীবনী
সেখানে তিনি পাঞ্জাবি রেসিডেন্ট এর কাছে মৌলিকভাবে ফারসি ভাষা শিখতেন। এছাড়া সৈনিকেরা তাদের দেশীয় বিদেশি বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র সহকারে সংগীত চর্চা করতেন। নজরুল সাহেব সেনাবাহিনীতে বসে অনেক রচনা সম্পন্ন করেছে। আবার সেখানে থেকেও তিনি কলকাতার বিভিন্ন সাহিত্য পত্রিকার গাহক ছিলেন। যেখানে প্রবাসী, ভারত বর্ষ, ভারতী মানসী, মর্মবাণী, সবুজপত্র, বঙ্গীয় মুসলিমের সাহিত্য পত্রিকা সংগ্রহ করতে পড়তেন।

সেই সময় তিনি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় এবং ফারসি কবি হাফিজের কিছু বই পড়তেন। এ সূত্রে বলা যায় সাহিত্য চর্চার অনেকখানি সেনাবাহিনীতে বসেই তিনি করেছেন। সৈনিক থাকা অবস্থায় প্রথমবার যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে। এবং সেখানে তার ইরাক যাওয়ার কথা ছিল কিন্তু যুদ্ধ ১৯২০ খ্রিস্টাব্দে শুরু হলে শেষ সময়ে ৪৯ বেঙ্গল রেডমেন্ট ভেঙে দেওয়া হয় এরপর তিনি সৈনিক জীবন ত্যাগ করে।

এরপর তিনি সাংবাদিক জীবন শুরু করে। যুদ্ধ শেষে তিনি কলকাতায় ফিরে আসে ৩২ নং কলেজ বঙ্গীয় মুসলিম সাহিত্যের সমিতির অফিসে বসবাস শুরু করে। এখানে তার সাথে অন্যতম কর্মকর্তা থাকতেন যেমন মুফাসসির আহমেদ। সেখানে তিনি সাহিত্য সাংবাদিকতা জীবনের মূল কাজগুলো শুরু করে। প্রথমে তিনি বিভিন্ন পত্রিকায় যেমন মোখলস ভারত বঙ্গীয় মুসলমান এগুলোতে তার লেখালেখি প্রকাশ করতেন। 

সেখানে তিনি বাঁধনহারা, স্বাধীন আরব, বাদল রাতের শরাব, কোরবানি ইত্যাদি লেখা প্রকাশ করত এবং প্রশংসিত হতো। এরপর তিনি কবি ও সমা চালকের সাথে নতুন ঘনিষ্ঠ পরিচয় দেওয়া হয় এবং সেখানে সমালোচনা প্রবন্ধ লেখেন। বঙ্গীয় সাহিত্য সমিতির অফিসে মোতাহার হোসেন মোজাম্মেল হক, মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ আরো অনেকেই পরিচিত হন। তৎকালীন সময়ে কলকাতা দুটি জনপ্রিয় সাহিত্য আসল গজেনদা আড্ডা ভারতীয় আড্ডায় অংশগ্রহণের সুবাদে পরিচিত হন।

সেখানে আরো অনেকের সাথে পরিচিত হন ওস্তাদ করমতুল্লা খা প্রমুখের সাথে। ১৯২১ সালে অক্টোবর মাসে তিনি শান্তিনিকেতনে গিয়ে রবীন্দ্রনাথের সাথে সাক্ষাৎ করেন। রবীন্দ্রনাথের মৃত্যু পর্যন্ত তাদের মধ্যে সাক্ষাৎ ছিল এবং সুসম্পর্ক ছিল। সেখানে কাজী মোতাহের হোসেনের সাথে তার বিশেষ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক হয়। ১৯২০ খ্রিস্টাব্দে ১২ ই জুলাই তারিখে নবযুগ নামক একটি সাধ্য দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত করা হয়।

অসহযোগ ও খিলাফত আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে প্রকাশিত পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন শেরে বাংলা একে ফজলুল হক। তার পত্রিকার মধ্যে নজরুল নিয়মিত সাংবাদিকতা শুরু করেন। সেখানে নজরুল সাহেব মুহাজিন হত্যার জন্য দায়ী কে শিরোনামে একটি প্রবন্ধ লেখেন যার পত্রিকা জামানতে তাকে পুলিশের নজরদারির মধ্যে থাকতে হয়। যেহেতু সাংবাদিকতায় ছিলেন তাই তৎকালীন রাজনৈতিক ও সামাজিক অবস্থার পক্ষ থেকে তিনি সুযোগ পান।

তিনি একটি সময় রাজনৈতিক সভা সমিতিতে যোগদান করছেন এবং তাদের রাজনীতির বিষয়ে প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার অর্জনে সুপরামর্শ পেয়েছিলেন। এছাড়াও তিনি বিভিন্ন ছোট খাটো অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পবিত্র এবং সাহিত্য চর্চা করতেন। এই সময় তিনি গান লিখছেন কিন্তু গানের সুর দিতেন না। এক সময়  ব্রাহ্মসমাজের সঙ্গীতজ্ঞ মোহিনী সেনগুপ্ত তার কয়েকটি কবিতায় সর দেন এবং তা পত্রিকায় প্রকাশ করে। এর মধ্যে অন্যতম হয়তো তোমার পাবো দেখা ওরে এ কোন স্নেহ সুরধ্বনি।।

পারিবারিক জীবন, কবি কাজী নজরুল ইসলামের পারিবারিক জীবন ছিল অত্যন্ত মার্বেন্টক এবং কষ্টদায়ক তবে শিশুকালে তিনি ভালই ছিলেন তার পিতার মৃত্যুর পর তাকে অনেক কষ্ট সহ্য করতে হয়। তবে ১৯২১ সালের জুন মাসের দিকে নজরুল ইসলাম সাহিত্য সমিতির অফিসে গন্ধ প্রকাশক আলী আকবর খানের সাথে পরিচিত হন। তার সাথে তিনি কুমিল্লায় যান এবং দেবীর বাড়িতে আসেন। আর সেখানে পরিচিত হন প্রণামী দেবীর সাথে যার সাথে তার প্রথম প্রণয়ন ও পরে বিয়ে হয়েছিল। 

এর আগে নজরুলের বিয়ে ঠিক হয়েছিল আলী আকবর খানের ভাগ্নি নার্গিস আনসার খানমের সাথে। তবে বিয়ের সময় কাবিননামা সম্পন্ন হওয়ার পর নজরুলকে ঘর জামাই থাকার শর্ত দেয়ায় তিনি ঘরজামাই থাকতে অস্বীকার করে বাসর ঘর সম্পূর্ণ না করে না দেখিস কে রেখে কুমিল্লা শহরে বিরজ সুন্দরী দেবীর বাড়িতে চলে যান। সেখানে তিনি অসুস্থ হয়ে যান এবং প্রমিলা দেবী নজরুলকে পরিচর্যা করেন এবং একসময় তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।

নজরুল সেন সাম্যবাদের একজন অগ্রদূত। তিনি মুসলিম হয়ে তার চার সন্তানের নাম বাংলা আরবি ফারসি উভয় ভাষাতে নামকরণ করেন। সেই নামগুলো ছিল কৃষ্ণ মোহাম্মদ, অরিন্দম খালেদ বুলবুল, কাজী সব্যসাচী এবং আরেকজনের নাম ছিল কাজী অনিরুদ্ধ। আশাকরি বুঝতে পেরেছেন বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের জীবনী। এক সময় তিনি দেশজুড়ে অসহযোগ আন্দোলন বিপুল উদ্দীপনার সৃষ্টি করে।

এবং কুমিল্লা থেকে কিছুদিনের জন্য দৌলতপুরে আলী আকবর খানের বাড়িতে থেকে আকবর কুমিল্লা ফিরে যান এবং ১৯ শে জুন এখানে যতদিন ছিলেন তিনি ততদিন একজন সক্রিয় রাজনৈতিকভাবে নিজেকে উপস্থাপন করেন। সেখানে বিভিন্ন সভায় তিনি যমতি দেন এবং তার রচিত গান শোনাতেন এর মধ্যে রয়েছে এ কোন পাগল পথিক ছুটে এলো বন্দিনী মার আঙিনায়। ১৯২১ খ্রিস্টাব্দে নভেম্বর মাসে আবার কুমিল্লায় ফিরে যান এবং নভেম্বর ছিল সমগ্র ভারতব্যাপী হরতাল। 

সেই সময় তুমি আবার পথে নেবে আসেন অসহযোগ তিনি ছিলেন সাথে শহর প্রতিক্ষণ করেন আর গান করেন। তিনি গান করেন ভিক্ষা দাও ভিক্ষা দাও ফিরে চাও ওগো পুরো বাসি। নজরুলের এই সময়ের কবিতা গান প্রবন্ধ মানুষের বিদ্রোহের ভাব জাগিয়ে তুলতো এবং তার প্রকাশে বিদ্রোহ কণ্ঠ জেগে উঠতো। উৎকৃষ্ট উদাহরণ স্বরূপ বিদ্রোহ নামক কবিতাটি উল্লেখযোগ্য। এটি কিছু অংশ আপনাদের সামনে উপস্থাপন করবো যা ১৯২২ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত হয় সারা বিশ্বে এবং ভারতবর্ষের সাহিত্য সমাজের খ্যাতি লাভ করে।

আমি বঞ্চিত ব্যথা পথবাসী চির গৃহহারা যত পথিকের 

আমি অবমানিতের মরম বেদনা, বেশি জ্বালা, চির লাঞ্ছিত বুকে গতি ফের আমি অভিমান চির খুদ্র হিয়ার কাতরতা, ব্যথা সুনিবিড় চিত চুম্বন-চোর কম্পন আমি থর-থর-থর প্রথম প্রকাশ কুমারীর! 

আমি গোপন প্রিয়ার চকিত চাহনি, ছল করে দেখা অনুক্ষণ। আমি চপল মেয়ের ভালোবাসা তার কাকন চুড়ির কন-কন। 

মহাবিদ্রোহের রণাক আমি সেই দিন হব শান্ত যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দন রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না। বিদ্রোহী রণকান্ত আমি সেইদিন হব শান্ত। আমি চির বিদ্রোহী বীর বিশ্ব ছাড়িয়ে উঠিয়াছি একা চির উন্নত শির। 

এটা ১৯২২ খ্রিস্টাব্দে ১২ ই আগস্ট নজরুল ধূমকেতু পত্রিকায় প্রকাশ করেন। যা দুই সপ্তাহে প্রকাশিত হতো তবে ১৯২০ সালের শতকে অসহযোগ ও খিলাফত আন্দোলনের সময় ব্যর্থতার পরিশ্রুতি এরপর পরপর স্বরাজ্য গঠনে ও সশস্ত্র বিপ্লব ও তার আবির্ভাব ঘটে তার ধূমকেতু পত্রিকার বিশেষ অবদান ছিল। সেখানে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কাজী নজরুলকে উদ্দেশ্য করে বলেছিলেন এবং লিখেছিলেন যে, কাজী নজরুল ইসলাম কল্যাণীর সেই আয় চলে আয়রে ধুমকেতু। আঁধারে বাদ অগ্নি সেতুর্দিনের এই দুর্দৃশ্যের উড়িয়ে দে তোর বিজয়ী কেতন। 

কাজী নজরুল ইসলামের জন্ম ও মৃত্যু তারিখ 

কাজী নজরুল ইসলামের জন্ম ও মৃত্যু তারিখ সম্পর্কে অনেকেই জানে এবং এ বিষয়টি বিভিন্ন পরীক্ষাতেও আসে। তাই আপনি যদি এটা মনে রাখতে চান তাহলে সহজেই এইভাবে মনে রাখতে পারেন। কাজী নজরুল ইসলাম নবযুগে সাংবাদিকতার পাশাপাশি নজরুল বেতারে কাজ করছিলেন। সে সময় ১৯৪১ খ্রিস্টাব্দে তিনি হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। তার বাকশক্তি হারিয়ে ফেলে এবং অসুস্থতার সম্বন্ধে সুষ্ঠুভাবে জানা যায় ১৯৪২ সালে।

সে সময় তাকে হোমিওপ্যাথি এবং আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা করানো হয়। কিন্তু তার কোন পরিবর্তন হয় না। তবে আশঙ্কা কর ছিল যে তাকে ইউরোপে পাঠানো হলে নিউরোসার্জারি করে সুস্থ করা যেত কিন্তু সফল বিশ্বযুদ্ধে চলার জন্য তাকে এই সুযোগ থেকে বঞ্চিত হতে হয়েছে। ১৯৪২ সালের শেষ দিকে তিনি মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে ১৯৫২ সাল পর্যন্ত তারা ছিলেন। ১৯৫২ সালে কবি পত্নী রাঁচির এক মানসিক হাসপাতালে পাঠানো হয় এই উদ্যোগে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিলেন নজরুলের আরোগ্যের জন্য গঠিত এক সংগঠন নাম যার নাম নজরুল নিরাময়ক সমিতি। 

সেখানে তৎকালের বিখ্যাত রাজনীতিবিদ শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় সহযোগিতা করেছিলেন কবি চার মাস রাচিতে ছিলেন। এরপর তিনি ১৯৫৩ সালে মে মাসে দেবীকে চিকিৎসার জন্য লন্ডনে পাঠানো হয়। আবার মে মাসের ১০ তারিখে লন্ডনের উদ্দেশ্যে রওনা হয় রেলস্টেশনে ছাড়েন লন্ডনে পৌঁছানোর পর বেশ কয়েকদিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসা তার রোগ নিরাময়ের চেষ্টা করেন। সেখানে ছিলেন এদের মধ্যে রাসেল ব্রেইনার উইলিয়াম জেডিয়েন্ট।

সকল দামি দামি ব্যক্তি তারা তিনবার নজরুলের সাথে দেখা করেন এবং তিনি প্রতিটি সেশনে প্রায় ২৫০ পাউন্ড করে পারিশ্রমিক দিয়েছেন। সেখানে রাসেল ব্রেনের মত নজরুলের রোগটি ছিল দূরারোগ্য আরোগ্য করা অসম্ভব ছিল। এ রোগের প্রাথমিক পর্যায়ে চিকিৎসা ছিল খুবই অপ্রতুল ও অপর্যাপ্ত। লন্ডনে সেখানে এক্সরে করানো হয় এবং মস্তিষ্কের ফ্রন্টাল লো সংকুচিত হয়ে পড়েছে। এখানে উন্নত ডক্টর ম্যাক্স ক্লিকস এর মত বেশ কয়েকজন চিকিৎসক একটি পদ্ধতির প্রয়োগে যথাকার দিকে মনে করেন তার নাম ছিল মার্কশিট অপারেশন।

কিসের উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে পাঠানো হয় ইউরোপ আমেরিকায় এবং জার্মানির বন বিশ্ববিদ্যালয় নিউরো সার্চ অধ্যাপক তার অপারেশনের জন্য বিরোধিতা করেন ভিনেগার চিকিৎসকরা এই অপারেশনের ব্যাপারে আপত্তি জানান। সবাই একত্রে আরেকটি পরীক্ষা করার কথা বলে মস্তিষ্কের রক্ত প্রবাহ গুলি মধ্যে এক্সরেতে দৃশ্যমান রং ভোরে রক্ত প্রবাহের ছবি তোলা হয়। পরের ফলাফল ডক্টর হফ বলেন যে কবে নিশ্চিতভাবে পিডস ডিজিজ নামক একটি নিউরো ঘটিত সমস্যায় ভুগছেন।

বিড়ি চিকিৎসকরা নজরুলের চিকিৎসার জন্য বড় অঙ্কের কি চেয়েছিলেন যেখানে ইউরোপের অন্য দেশের কোন চিকিৎসায় ফি নেয়নি। নজরুল অচিরে দেশে ফিরে আসেন এরপর পরেও এই পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ডঃ বিধান চন্দ্র রায় ভিয়েনা জান এবং ডক্টর হফের কাছে বিস্তারিত শোনেন। জর্জ বর্তনী নজরুলের সাথে ইউরোপে গিয়েছিলেন তারা সবাই ১৯৫৩ সালের ডিসেম্বরের রোম থেকে দেশের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেন।

তিনি তার জীবনে ১৯৭৬ সালে স্বাধীন বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পান। নজরুলের মৃত্যুর পূর্বে তার ছোট ছেলে বিখ্যাত গিটারবাদক কাজী অনিরুদ্ধ মৃত্যুবরণ করেন। ১৯৭৬ সালের নজরুলের স্বাস্থ্যের অবনতি আরো বেশি হয়ে যায় সে দিনগুলো পিসি হাসপাতালে কাটে। সর্বশেষ তিনি ১৯৭৬ খ্রিস্টাব্দের ২৯ শে আগস্ট তারিখে মৃত্যুবরণ করেন। তিনি তার লেখনীতে বলেছিলেন মসজিদের পাশে আমার কবর দিও ভাই গোবরের থেকে মোয়াজ্জিনের আজান শুনতে পাই। 

এই ইচ্ছেটিকে বিজয়নগরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রিক মসজিদের পাশে সমাধিস্থ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেই অনুযায়ী তার সমাধি করা হয় তবে প্রমিলা দেবীর শেষ ইচ্ছা ছিল তার স্বামীকে যেন তার কবরের পাশে সমাদৃত করা হয় কিন্তু তার এই শেষ ইচ্ছা পূরণ করা হয়নি। নজরুল সাহেবের জানাযায় ১ হাজার এরও বেশি মানুষ জন্ম নেয়। তার জানাজাতে রাষ্ট্রপতি আবু সাদাত, মেজর জেনারেল জিয়ারুল রহমান। বাংলাদেশ এবং ভারত দুই রাষ্ট্রের তার জন্য জাতীয় শোক দিবস পালন করা হয়। তার মৃত্যুতে দুই দেশের দুই দিনের শোক দিবস পালন হয়। 

তবে কাজী নজরুল ইসলাম ১৮৯৯ খ্রিস্টাব্দের ২৪ শে মে এবং ১৩০৬ বঙ্গাব্দের ১১ ই জষ্ঠ জন্মগ্রহণ করে। বর্তমান খ্রিস্টাব্দের ২৫ শে মে এই দিনটি পড়ছে যা বাংলাদেশ নজরুলের জন্মদিন হিসেবে পালন করা হয়। আশা করি আজকের এই তথ্যগুলো জেনে আপনি উপকৃত হয়েছেন যে নজরুল সাহেব কিভাবে জন্মগ্রহণ করেন এবং তার অসুস্থতার কারণ কি ছিল এবং কিভাবে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। এবং কোথায় তার সমাধিস্থ করা হয়। 

কাজী নজরুল ইসলামকে বিদ্রোহী কবি উপাধি দেন কে 

কাজী নজরুল ইসলামকে বিদ্রোহী কবি উপাধি দেন যে ব্যক্তি তার নাম আমরা অনেকেই জানি আবার অনেকেই জানিনা। কাজী নজরুল ইসলাম বিদ্রোহী কবিতা যার জন্য তাকে বিদ্রোহী কবি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। সেই বিদ্রোহী কবিতাটি ২২ শে অক্টোবর ১৯২২ সালে ধূমকেতু পত্রিকায় প্রকাশিত করা হয়। তারপর সেই সময়ের প্রথম চৌধুরী কাজী নজরুল ইসলামকে বিদ্রোহী কবি উপাধি দিয়েছেন। 

হোম চৌধুরী ছিলেন একজন বিশিষ্ট কবি তিনি তার লেখনিত বিশেষ ধরনের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও মানুষের মনুষত্ব দিয়ে জাগিয়ে তোলার জন্য বিভিন্ন ধরনের কাব্য রচনায় এবং উপন্যাস সহ বিভিন্ন ছোটগল্প রচনা করেছে। সেই দৃষ্টিকোণ থেকে কবি নজরুলের বিদ্রোহ কন্ঠ এবং তার লেখনির বিদ্রোহ ভঙ্গী তা দেখে তিনি এই উপাধি দিতে পারেন।

কাজী নজরুল ইসলামের নাম দুখু মিয়া কেন 

কাজী নজরুল ইসলামের নাম দুখিয়া কেন এটা অনেকে জানতে চাই। তিনি তার জীবনের অনেকটা সময় দুঃখ এবং কষ্টের সাথে বিভিন্ন সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে পার করেছেন। তার জন্মের পর তার বড় তিন ভাই ছিলেন কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো তার বড় তিন ভাই যারা জন্মের পরেই মারা যায়। সেই কারণে যেহেতু তার ভাইয়েরা জন্মের পরে মারা যায় তাই তার দাদী তার নাম রেখেছিল জন্মের পরে দুখী মিয়া। 

পরবর্তীতে তিনি তার জীবনের পর চরম পর্যায়ে পার করেছেন এবং হয়ে উঠেছেন মহা প্রতিভাবান কবি। তার বিদ্রোহ কবি ১৯২২ সাল থেকে শুরু করে আজও মানুষের হৃদয়ে সত্যের পক্ষে বিদ্রোহমূলক শক্তি সঞ্চয় করে। বিশ্ব এখনও তার সাহিত্য পড়ে মুক্ত হয় এবং কম্পিত জাগ্রত শক্তি অনুভব করে। যে শক্তি মানুষকে অন্যায় এবং অত্যাচারের বিরুদ্ধে সমাজ কে রক্ষা করার জন্য জাগিয়ে তুলে। 

আবার এই দুখু মিয়ার আরো একটি নাম ছিল যে বিস্ময়ের নাম দুখু মিয়া। তিনি তার লিখিত সকল ধরনের সকল বর্ণ ধর্ম নির্বিশেষে মানুষকে মানুষ হওয়ার জন্য আহ্বান করেছেন। মনুষ্যত্ব নিয়ে মানুষের মাঝে সততার সাথে নম্রতার সাথে বেঁচে থাকার জন্য শিক্ষা দিয়ে গেছেন। তাই সাহিত্যে তার এক বিস্ময়কর নাম উঠে আছে। আশা করি বুঝতে পেরেছেন যে বিশ্বকবি ও বিদ্রোহ কবি কাজী নজরুল ইসলামকে কেন দুঃখ মিয়া নাম দেওয়া হয়। 

কাজী নজরুল ইসলামের শিক্ষা জীবন

কাজী নজরুল ইসলামের শিক্ষা জীবন সম্পর্কে ইতিমধ্যে আপনাদের সামনে যে তথ্যগুলো উপস্থাপন করেছি তা থেকে আপনি হয়তো বুঝতে পারছেন যে কাজী নজরুল ইসলাম কতটা ধৈর্যের সাথে শিক্ষা অর্জন করেছেন। তিনি তার শিক্ষা জীবন শুরু করেন বাল্যকাল থেকে তিনি মক্তবে পড়াশোনার জীবন শুরু করেন এবং সেখানে বাংলা ও আরবি ভাষার সাথে ফারসি ভাষার চর্চা করতেন।

কাজী নজরুল ইসলামের শিক্ষা জীবন
 

এক সময় তার বিভিন্ন কারণে বিশেষ করে তার ১৯০৮ সালে পিতা মারা যায় সেখান থেকে তার পরিবারে অনেক অভাব অনটন সৃষ্টি হয় এবং তার পড়ালেখা বন্ধ হয়ে যায়। ১০ বছর বয়সে তিনি কাজে নামে এবং সে সময় বিভিন্ন কাজ করে এবং তার জীবিকা অর্জন করে এরপর তিনি লোটো দলে যোগ দেন এবং সেখানে জীবিকা এবং তার পাশাপাশি গান-বাজনা ও কবিতা সাহিত্য গান চর্চা করতেন। 

সেখান থেকে তিনি রানীগঞ্জ একটি স্কুলে ভর্তি হন এবং সেখানে কিছুদিন লেখাপড়ার পর পর ৬ পাস করে। কিন্তু আবার পড়াশোনা বন্ধ করে একটা সময় তার একটি ভালো শিক্ষকের সাথে দেখা হয় তিনি তাকে একটি ভালো স্কুলে ইংরেজি স্কুলে পড়াশোনা করানোর সুযোগ দেয়। এখানে কিছু সময় পড়াশোনা করার পর সেখান থেকে থাকা অবস্থায় পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যায় আবার সে তার আসানসোলের একটি রুটির মাসিক বেতনে কাজ করতেন। 

কাজের ফাঁকে ফাঁকে তিনি বিভিন্ন ধরনের প্রতিভা দেখাতেন যাতে মুগ্ধ হয়ে একজন পুলিশ দারোগা থাকে তার সাথে নিয়ে ময়মনসিংহের একটি জেলা স্কুলে ভর্তি করে। সে সময় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর মানুষ অন্যভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় সেই সাথে পড়ালেখা বন্ধ হয়ে যায় নজরুল ইসলামের। পরবর্তীতে তিনি এইট পাস করার পরে ভারতীয় সেনাবাহিনীতে যোগদান এবং সেখানে থেকে তার কর্মজীবন শুরু করে। এভাবে তার পড়াশোনার জীবন শুরু হয় এবং সাংবাদিকতা এবং বিভিন্ন জীবনের ধারাবাহিক পরিবর্তন হতে থাকে। 

কাজী নজরুল ইসলাম কয়টি বিয়ে করেন 

কাজী নজরুল ইসলাম কয়টি বিয়ে করেন এ বিষয়ে অনেকে জানেন না আসলে তিনি দুইটি বিবাহ করেছিলেন। প্রথমে যে বিবাহটি করেন সেটা হলো ১৯২১ সালে কুমিল্লার দৌলতপুরে নার্গিস আনম খান কে। কিন্তু তার সাথে স্বার্থ জুড়ে দেয় নজরুল ইসলামকে ঘর জামাই থাকতে হবে তাই তিনি সেখান থেকে বাসর রাত না করেই চলে আসেন। 

পরবর্তীতে তিনি দ্বিতীয় বিয়ে করেন ১৯২৪ সালে গিরিবালা সেন গুপ্তের মেয়ে সপিলা সেনগুপ্তকে। তাহলে বুঝতেই পারছেন যে নজরুল সাহেব কয়টি বিয়ে করেছেন এবং কিভাবে তিনি দুইটি বিয়া করেছেন তার চারটি সন্তান ছিল এবং সে সন্তান গুলোর নাম তিনি ফারসি বাংলা আরবি ভাষা অনুযায়ী রেখেছিলেন যা উপরে উল্লেখ করেছি।

কাজী নজরুল ইসলামের রচনা সমূহ 

কাজী নজরুল ইসলামের রচনা সমূহ অপরিসীম তিনি বিভিন্ন ধরনের প্রবন্ধ ছোটগল্প উপন্যাস কবিতা নাটক গজল গান রচনা করতেন। যা পড়ে মানুষ মুগ্ধ হয়ে যায় এখনো তার লিখনী গুলো মানুষের মনের গভীরে দোলা দিয়ে যায়। তার লেখনীর ভিতরে রয়েছে ধর্মীয় দর্শন রয়েছে ও সামাজিকতার সঠিক নিদর্শন। 

তিনি তার ইসলামিক রচনার মধ্যে ইসলামকে ফুটিয়ে তুলেছেন মানবিক গুণের মধ্যে দিয়ে মানবতা। কেউ যদি কাজী নজরুল ইসলামের রচনা সম্পর্কে সঠিক তথ্য এবং সঠিক জ্ঞান অনুসরণ করতে চাই তাহলে সে যেন অবশ্যই তার বিদ্রোহী কবি প্রাপ্ত হওয়ার যে কবিতা বিদ্রোহী কবিতা সেই কবিতাটি যেন পড়ে। 

এছাড়া আরো নানান ধরনের সাম্য বিপ্লবী কাব্য তিনি লিখেছেন তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে সাম্যবাদ, মানবতাবাদ, ন্যায় বিচার, নারী অধিকার, সম্মান ও প্রেমের কবিতা নাটক।তাই আপনিও যদি মুগ্ধ হয়ে নজরুল গীতি শুনতে চান বিভিন্ন মনোমুগ্ধকর ঘটনা শুনতে পারবেন যেগুলো আপনার জীবনকে আরো সুন্দর এবং অনুপ্রেরণিত করে তুলবে তাই আপনি যদি নিউজিলের রচনা না পড়েন।

তাহলে এখন থেকে পড়ে এর মর্ম এবং তাৎপর্য বোঝার চেষ্টা করতে পারেন। তিনি সারা বিশ্বের ভিতরে বিদ্রোহ নামে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন তাই তার বিদ্রোহ রচনাটি পড়া দরকার। তার এই রচনার একটি অংশ আরতির থালা তাফসীর মালা আসিবে না কোন কাজে মানুষ করিবে মানুষের সেবা বাকি সবকিছু বাজে। 

কাজী নজরুল ইসলামের কাব্যগ্রন্থ কয়টি জানুন 

কাজী নজরুল ইসলামের কাব্যগ্রন্থ কয়টি এ বিষয়টি অনেকেই জানেনা। আসলে কবি নজরুলের আমার জানামতে কাব্যগ্রন্থের সংখ্যা ২২ টি যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য অগ্নিবাণী, যা ১৯২২ সালে প্রকাশিত, এছাড়া আরো যেগুলো রয়েছে তা পর্যায়ক্রমে আপনাদের সামনে উপস্থাপন করলাম। 

  • দোলনচাঁপা যা ১৯২৩ সালে প্রকাশিত 
  • বিয়ের বাসি যা ১৯২৪ সালে প্রকাশিত। 
  • ভাঙ্গার গান যা ১৯২৪ সালে প্রকাশিত। 
  • সাম্যবাদী ১৯২৫ সালে প্রকাশিত। 
  • চিত্তনামা এটা ১৯২৫ সালে প্রকাশিত। 
  • ছায়ানট ১৯২৫ সালে প্রকাশিত। 
  • ঝিঙে ফুল ১৯২৬ সালে প্রকাশিত 
  • পুবের হাওয়া ১৯২৬ সালে প্রকাশিত। 
  • সর্বহারা ১৯২৬ সালে প্রকাশিত। 
  • ফনি মনসা ১৯৪৭ সালে প্রকাশিত। 
  • সঞ্চিতা ১৯২৮ সালে প্রকাশিত। 
  • জিনজির ১৯২৮ সালে প্রকাশিত। 
  • হিন্দু সিন্দোল ১৯২৮ সালে প্রকাশিত।
  • চক্র বাক ১৯১৯ সালে প্রকাশিত। 
  • সন্ধ্যা ১৯২০ সালে প্রকাশিত।
  • প্রলয় শিখা ১৯৩০ সালে প্রকাশিত।
  • নির্ঝর ১৯৩৯ সালে প্রকাশিত। 
  • নতুন চাঁদ চরিত্র ১৯৪৫ সালে প্রকাশিত। 
  • মরু ভাস্কর ১৯৫৫ সালে প্রকাশিত। 
  • ঝড় ১৯৬১ সালে প্রকাশিত। 

আশা করি বুঝতে পেরেছেন প্রিয় পাঠক যে নজরুলের কাব্যগ্রন্থ কয়টি। 

কাজী নজরুল ইসলামের উপন্যাস কয়টি 

কাজী নজরুল ইসলামের উপন্যাস কয়টি এটা আমাদের জানা উচিত আসলে কাজী নজরুল ইসলামের উপন্যাসের সংখ্যা তিনটি সেগুলো হচ্ছে বাঁধনহারা যা কিনা ১৯২৭ সালে প্রকাশ করা হয়। এছাড়াও রয়েছে মৃত্যুক্ষুধা যা ১৯৩০ সালে প্রকাশ করা হয় এবং প্রচুর পরিমাণে আড়রণ সৃষ্টি করে। 

সর্বশেষ যে বিখ্যাত উপন্যাসটি প্রকাশিত করা হয় তা হল কুহেলিকা যা ১৯৩১ সালে প্রকাশ করা হয় এবং এই উপন্যাস গুলো খুব জনপ্রিয়তা লাভ করে তাই আপনি খুব সহজেই এই উপন্যাস গুলো পড়ে এর মূল বিষয়গুলো উপলব্ধি করতে পারেন।

কাজী নজরুল ইসলামের নাটক কয়টি জানুন 

কাজী নজরুল ইসলামের নাটক কয়টি এ বিষয়টি আমাদের জানা উচিত সাধারণত আমরা জানি এই কাজী নজরুল ইসলামের লিখিত সাতটি নাটক রয়েছে। যে নাটকগুলো অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং শিক্ষানীয় যা থেকে আপনি বিভিন্ন শিক্ষনীয় বিষয় সম্পর্কে জানতে পারবেন। নাম ও প্রকাশিত সাল নিচে উপস্থাপন করলাম। 

  • আলোয়া যা ১৯৩১ সালে প্রকাশ করা হয়।
  • ঝিলিমিলি ১৯৩০ সালে প্রকাশ করা হয়।
  • মধুমালা ১৯৫৯ সালে প্রকাশ করা হয়।
  • পুতুলের বিয়ে কিশোর নাটক ১৯৩৩ সালে প্রকাশ করা হয়।
  • আবার মধুমালা গীতি নট্য ১৯৬০ সালে প্রকাশ করা হয়।
  • এছাড়াও ঝড় কিশর কাব্য নাটক ১৯৬০ সালে প্রকাশ করা হয়।
  • পিলে পটকা পুতুলের বিয়ে কিশোর কাব্য নাটক ১৯৬৪ সালে প্রকাশ করা হয়।

এই নাটক গুলো বিখ্যাত যা নজরুল ইসলামের লেখা এবং এই নাটক গুলোর মধ্যে মানুষের সকল বয়সের বিভিন্ন আচরণ সম্পর্কে বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা এবং বিভিন্ন ইতিহাসিক সার্বজনীন ঘটে যাওয়া ঘটনা উল্লেখ করা হয়েছে। 

কাজী নজরুল ইসলামের প্রবন্ধ কয়টি

কাজী নজরুল ইসলামের প্রবন্ধ কয়টি এটা জেনে নিন। সাধারণত কাজী নজরুল ইসলামের ছয়টি প্রবন্ধ রয়েছে যা বিশ্বব্যাপী খ্যাতি অর্জন করেছে এ প্রবন্ধগুলো পড়ে আপনি মনমুগ্ধ হতে পারবেন। সচরাচর এর মধ্যে রয়েছে প্রবন্ধ যার নাম সবার প্রথমেই আসে সেটা হচ্ছে যুগবাণী যা ১৯২২ সালে প্রকাশ করা হয়। 

এছাড়া ঝিঙ এ ফুল আছে যা ১৯২৬ সালে প্রকাশ করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে আরও একটি যাকে বলা হয় দুর্দিনের যাত্রী ১৯২৬ সালে প্রকাশ করা হয়। রুদ্র মঙ্গল যা প্রকাশ করা হয় ১৯২৭ সালে। আরো একটি রয়েছে যা অত্যন্ত উন্নত মানের প্রবন্ধ যার নাম ধূমকেতু এটি ১৯৬১ সালে প্রকাশ করা হয়। সর্বশেষ রাজা বন্ধুর জবানবন্দি এটার প্রকাশন ডেট আমার জানা নেই। 

কাজী নজরুল ইসলামের ছদ্মনাম কি ছিল? 

অনেকে জানতে চাই কাজী নজরুল ইসলামের ছদ্মনাম কি ছিল। তারা জেনে নিন আজকের এই নাম থেকে। কাজী নজরুল ইসলামকে ছোটবেলায় দুখু মিয়া বলে ডাকা হতো এবং তার আসল নাম কাজী নজরুল ইসলাম তবে তাকে বিভিন্ন ছদ্মনামে ডাকার মাধ্যমে তার একটি ছদ্মনাম দেওয়া হয়েছে তাই সেই ছন্দ নামটি হচ্ছে ধুমকেতু। এছাড়াও তার ডাক নাম দুখু মিয়া ও তারা ক্ষ্যাপা বলেও জানা যায়। 

কাজী নজরুল ইসলামের ছদ্মনাম কি ছিল?
 

কাজী নজরুল ইসলামের বাকশক্তি হারিয়ে ফেলেন কত সালে এই বিষয়ে অনেকে জানতে চাই আসলে কাজী নজরুল ইসলাম বাকশক্তি হারিয়ে ফেলেন ১৯৪৩ সালেও তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং তার এক ধরনের সমস্যা হয় যেখানে তিনি বাকশক্তি হারিয়ে ফেলেন। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানার জন্য আজকের এই পোস্টটি বিস্তারিত মনোযোগ সহকারে পড়ুন। 

কাজী নজরুল ইসলাম নিয়ে সচরাচর জিজ্ঞাসিত প্রশ্নের উত্তর 

প্রশ্নঃ কাজী নজরুল ইসলাম কাকে বিয়ে করেছিলেন? 

উত্তরঃ কাজী নজরুল ইসলামের একজনের সাথে বিয়ের কথা ছিল তার সাথে বিয়ে হয়েছিল যার নাম ছিল নার্গিস। তবে সেখানে একটু সমস্যার কারণে তাকে চলে আসতে হয়। পরে তিনি কুমিল্লার বিরজ সুন্দরী এর বাড়িতে আসেন এবং পরে পরিচিত হন প্রমিলা দেবীর সাথে এবং তার সাথে বিবাহ বন্ধনে পরে আবদ্ধ হন। 

প্রশ্নঃ কাজী নজরুল ইসলামের স্ত্রীর নাম কি ছিল?

উত্তরঃ কাজী নজরুল ইসলামের স্ত্রীর নাম ছিল আশালতা সেনগুপ্ত বা প্রমিলা দেবী তিনি বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের বউ ছিলেন। এছাড়াও কাজী নজরুল ইসলামের নার্গিস নামের একটি মেয়ের সাথে বিয়ে হয়েছিল। 

প্রশ্নঃ কাজল ইসলাম কি হিন্দু নাকি মুসলমান ছিলেন? 

উত্তরঃ ইসলাম জন্মগতভাবে মুসলিম ছিলেন তবে তিনি একজন হিন্দুকে বিবাহ করেন এবং তিনি যেহেতু ভারতবর্ষে জন্মগ্রহণ করেন তাই তিনি হিন্দু মুসলিম সকল সম্প্রদায়ের প্রতি সমান শ্রদ্ধা করতেন। কারণ তিনি প্রকাশ করে গেছেন তার লেখনীতে হিন্দু-মুসলিম সম্পর্কে বলেছেন সকলেই সৃষ্টিকর্তা একই।

প্রশ্নঃ কাজী নজরুল ইসলামের নাতি কে ছিলেন? 

উত্তরঃ কাজী নজরুল ইসলামের নাতি বাবুল কাজী, তিনি জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট লাইফ সাপোর্টে ছিলেন ৫৯ বছর বয়সে তিনি মারা যান। 

প্রশ্নঃ নজরুল ইসলাম কেন বাংলাদেশে আসেন? 

উত্তরঃ বাংলাদেশ সরকারের আমন্ত্রণ ও ভারত সরকারের সম্মতিতে ১৯৭৬ সালের ২৪ শে মে অসুস্থ ভারতীয় কবি সপরিবারে বাংলাদেশের স্থানান্তর হন। তারা কলকাতা থেকে ঢাকায় আসেন। এবং ১৯৭৬ সালের ১৪ ই ফেব্রুয়ারি তাকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব প্রদান করা হয়। 

প্রশ্নঃ কাজী নজরুল ইসলামের প্রথম উপন্যাস কোনটি? 

উত্তরঃ কাজী নজরুল ইসলামের রচিত প্রথম উপন্যাস হচ্ছে বাঁধনহারা জাকিরা ১৯২১ সালে প্রথম মোকলেস ভারত পত্রিকায় প্রকাশ করা হয়। 

প্রশ্নঃ কাজী নজরুল ইসলামের প্রিয় খাবার কি? 

উত্তরঃ বাঙালি রন্ধনপ্রণালী অন্তর্নিহিত একটি সম্মানিত সুস্বাদু খাবার কই টমেটো, প্রখ্যাত কবি কাজী নজরুল ইসলাম সহ অনেকেই দ্বারা লালিত এই খাবারটি মরম পরিবেশ সৃষ্টি করতো সেই সময়। 

প্রশ্নঃ বাংলাদেশের ভারতীয় কবি কে? 

উত্তরঃ বাংলাদেশের ভারতীয় কবি হচ্ছে কবি কাজী নজরুল ইসলাম তিনি ১৯৭৬ সালে ২৪ শে মে বাংলাদেশ সরকার এবং ভারত সরকারের সম্মতিতে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পাবে সরকারের অনুমতিতে তাই তিনি এদেশে আসেন। 

প্রশ্নঃ কাজী নজরুল ইসলামের প্রেমিকা কে ছিলেন? 

উত্তরঃ কাজী নজরুল ইসলামের ভালোবাসার মানুষ বা প্রেমিকা বা পছন্দের মানুষ যাই বলেন না কেন সে এমন একজন লোক ছিল যার সাথে বিবাহ হওয়ার পরে মেয়ের বাড়ি থেকে নজরুল ইসলামকে ঘর জামাই থাকার বলায় তিনি দিয়ে অস্বীকার করে সেখান থেকে বাসর না করেই চলে আসে। তার নাম ছিল নার্গিস আসার খানম। তার পিতার নাম মুন্সি মালেক মালেক। কলকাতায় কাজী নজরুল ইসলামের পাশাপাশি থাকতেন। 

প্রশ্নঃ নজরুল নামের অর্থ কি? 

উত্তরঃ নজরুল নামটি আরবি থেকে এসেছে এবং মূল শব্দ নজর থেকে উদ্বুদ্ধ হয়েছে যার অর্থ রত বা প্রতিজ্ঞা। সেই দৃষ্টিকোণ থেকে নজরুলকে একজন নিবেদিত বা যিনি একটি উদ্দেশ্যের প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ সেই হিসেবে বিবেচনা করা হয়। 

বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের সংক্ষিপ্ত জীবনী নিয়ে শেষ মন্তব্য

বিদ্রোহের কবি কাজী নজরুল ইসলামের সংক্ষিপ্ত জীবনী নিয়ে আপনাদের সামনে যে তথ্যগুলো উপস্থাপন করেছি। যা আপনার জীবনে নজরুল সম্পর্কে আরো উন্নত এবং আকর্ষণীয় ধারণা ভিত্ত করতে সাহায্য করবে। প্রকৃত অর্থে সেই সময় নজরুল ছিল এক বিদ্রোহের চমক। তিনি তার লেখনীতে প্রকাশ করেছেন সকল ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে ধনী-গরিব সবাই সমান। 

কার লেখা কাব্য পানিতে সকল ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সাম্যের বাণী উপস্থাপন করা হয়েছে তাই চির স্মরণীয় হয়ে আছে আজও মানুষের মনে প্রানে। আপনি যদি একজন বাঙালি হন এবং বাংলাকে যদি ভালোবাসেন তাহলে অবশ্যই বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের লেখনী গুলো পড়ে এর আসল অনুভূতি অনুভব করতে পারবেন। আশাকরি বুঝতে পেরেছেন নজরুলের কবিতা বাঙালি জাতি ও বিশ্বের কাছে কতটা গুরুত্বপূর্ণ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মুক্তআঁখি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url