বাংলাদেশের সংবিধান কত তারিখে কার্যকর হয় বিস্তারিত জানুন

বাংলাদেশের সংবিধান কত তারিখে কার্যকর হয় তার সকল ইতিহাস বিস্তারিত আজকের আর্টিকেল থেকে জেনে নিন। আমরা যারা বাংলাদেশে বাস করি তাদের এই সংবিধান গুলো জানা উচিত। 

বাংলাদেশের সংবিধান কত তারিখে কার্যকর হয় 

সংবিধান হল একটি রাষ্টের সর্বোচ্চ আইন যা রাষ্ট সঠিক ভাবে প্ররিচালিনা করার জন্য ব্যবহার করা হয়। ১৯৭২ সালের ১১ জানুয়ারিতে অস্থায়ীভাবে জারি করা হয়। পরর্তিতে আরো অনেক ভাবে এর মুল বিষয় গুলো বাস্থাবয়ন করা হয়।

পোস্ট সূচিপত্রঃ বাংলাদেশের সংবিধান কত তারিখে কার্যকর হয় বিস্তারিত জানুন 

বাংলাদেশের সংবিধান কত তারিখে কার্যকর হয় জানুন 

বাংলাদেশের সংবিধান কত তারিখে কার্যকর হয় এটা আমাদের জানার দরকার আছের তাই আপনি এই বিষয় গুলো জেনে রাখুন।  বাংলাদেশের খসড়া সংবিধান ১২ ই অক্টোবর ১৯৭২ গণ, পরিষদের উত্থাপন করা হয়। এছাড়াও ৪ ই নভেম্বরে ১৯৭২ সালে গৃহীত হয় এবং ১৬ ডিসেম্বরে বাংলাদেশ সংবিধান টি কার্যকর হয় ১৯৭২ সালে।

সুতরাং আমরা বাংলাদেশের সংবিধান কখন থেকে কার্যকর হয় এ বিষয়ে উক্ত বিশ্লেষণ থেকে বুঝতে পারি যে ১৬ ডিসেম্বরে সর্বোচ্চভাবে কার্যকর হয়। এই বিষয়টিকে অনেকে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান এর প্রবর্তিত হয় বলেও মনে করেন। আমাদের বাংলার শেষ সংবিধান দুইটি ভাষায় রচিত হয়েছে। এই বাংলা ভাষায় বাংলাদেশের সংবিধানে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি চারটি রয়েছে। 

আরো পড়ুনঃ আন্তর্জাতিক মানব সংহতি দিবস - আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন সহায়তা প্রদানকারী সংস্থা 

বাংলাদেশের সংবিধানে কয়টি ভাগ আছে এটাও আপনাদেরকে জানিয়ে রাখি, সাধারণত বাংলাদেশের সংবিধানে ১১ টি ভাগ রয়েছে। রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য মূলনীতি রয়েছে চারটি, এছাড়া বাংলাদেশের সংবিধানের সর্বোচ্চ লক্ষ্য হলো সুপ্রিম কোর্ট। এশারের আরেকটু পূর্বে থেকে বলতে গেলে বাংলাদেশের সংবিধানে যাত্রার সূচনা হয়েছিল ১৯৭১ সালে ১০ শে এপ্রিল স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের মাধ্যমে।

সে সময় যা স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের আওতায় জারিকৃত ভাবে একটি অস্থায়ী সংবিধানের ঘোষণা দেয় এই ঘোষণাপত্রের স্থলা ভিত্তিক হয় ১৯৭২ সালের বাংলাদেশের অস্থায়ী সংবিধানের আদেশে। পরবর্তীতে এই সংবিধান গুলো বর্তমান পর্যায়ে পর্যন্ত চলে আসে। বাংলাদেশের সংবিধানে সর্বোচ্চ বিষয় হচ্ছে বাংলাদেশের সংবিধান ১৯৭২ সালের সংবিধান। আশাকরি বাংলাদেশের সংবিধান কত তারিখে কার্যকর হয় সে বিষয়ে জানতে পেরেছেন। 

বাংলাদেশের সংবিধান কত তারিখে গৃহীত হয় 

বাংলাদেশের সংবিধান কত তারিখে গৃহীত হয় এ বিষয়ে ইতিমধ্যেই অনেক তথ্য উপস্থাপন করেছে। বাংলাদেশের সংবিধান কার্যকর হওয়া বা গৃহীত হওয়ার মধ্যে এতটুকু পার্থক্য যে গৃহীত বলতে গ্রহণ করা হয়েছে যে সময় সে সময় কে বা প্রথম অবস্থাত বোঝায়। আর কার্যকর বলতে ১৯৭২ এর ১৬ ই ডিসেম্বর বিজয় দিবসের প্রথম বার্ষিকী থেকে শুরু হয়। 

তবে প্রথমে পালিত হয় সংবিধানের যে দিন সেটাকে চারে নভেম্বর পালিত করা হয়। তাই এ বিষয়গুলো আমাদের জানা উচিত বাংলাদেশের সংবিধান প্রথম অবস্থায় বা সর্বপ্রথম ৪ ই নভেম্বর গৃহীত হয় যা বর্তমানে এখন পর্যন্ত এই সংবিধানের বিষয়গুলো কার্যকর রয়েছে। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান স্বাধীন ও সার্বভৌমত্ব বাংলাদেশের রাষ্ট্র গঠনের জন্য নির্ধারণকারী সর্বোচ্চ আইন।

আরো পড়ুনঃ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সুবিধা ও অসুবিধা বিস্তারিত  

এই সংবিধানটি আওয়ামী লীগের দলীয়ভাবে বিতর্কিত অবস্থায় সংবিধান সভা হিসেবে গণতন্ত্র প্রণয়ন করে। মুজিববাদের জার্নিতে তথা জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা সংবিধানে রাষ্ট্র পরিচালনা করার জন্য মূলনীতি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। সংবিধানের দ্বিতীয় ভাগে বর্ণিত রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি মধ্যে আদালত কর্তৃক যোগ্য নয়। ফলে এই বিধায় সলিমুল্লাহ খান ও অনেকেই শূন্যগর্ভ প্রতিশ্রুতি বলেছে। 

তৃতীয় ভাগে বর্ণিত মৌখিক অধিকারগুলো নানাবিধ সত্য হওয়ায় এগুলো ফাঁকফোকর বলে নাগরিকের মৌলিক অধিকার গুলো লঙ্ঘন করেছে। এছাড়া সংবিধানের চতুর্থ ভাগ প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন মন্ত্রীসভায় নির্বাহী ক্ষমতা ন্যস্ত করেছে কিন্তু প্রধানমন্ত্রী কে অপসারণের কোন বিধান রাখেনি। যার ফলে বাংলাদেশের শাসন ব্যবস্থাকে নির্বাচিত স্বৈরতন্ত্র বলা হয়ে থাকে। 

১৮৬০ সালের দন্ডবিধি এবং ১৮৯৮ সালের ফৌজদারি কার্যবিধির মতো গঠনমূলক ব্রিটিশ আইনগুলোর নিবর্তনমূলক ধারাগুলো বহাল থেকে গেছে। এবং ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইন এর ২০২৪ সালে সাইবার নিরাপত্তা আইনের মতো জনবিরোধী আইন গুলোর মাধ্যমে নাগরিক অধিকার সরকার আরো বেশি সংকুচিত হয়েছে। দেশের সার্বিক নিরাপত্তার কথা ভেবে সকল সংবিধান কার্যকর করা উচিত।

বাংলাদেশের সংবিধান কতবার সংশোধিত হয়েছে জানুন

বাংলাদেশের সংবিধান কতবার সংশোধিত হয়েছে আপনি যদি না জেনে থাকেন তাহলে এই তথ্যগুলো দেখে নিন। আমাদের বাংলাদেশের সংবিধান বর্তমান পর্যন্ত ১৭ বার সংশোধিত হয়েছে বিভিন্ন কারণে, যে কারণগুলো ছিল সংবিধানের ভুল ত্রুটি বা বিভিন্ন সময়ের প্রেক্ষিতে তার উন্নতির লক্ষ্যে। তবে এই সংশোধনের মধ্যে পঞ্চম থেকে সপ্তম, ত্রয়োদশ,১৩,১৬ নং সংশোধনের সময় সুপ্রিম কোর্ট কর্তৃক বাতিল হয়েছে। 

বাংলাদেশের সংবিধান কতবার সংশোধিত হয়েছে জানুন

বাংলাদেশের সংবিধান সমূহের সংক্ষিপ্ত বিবরণঃ

১ তম সংবিধান সংশোধনী ১৫ ই জুলাই ১৯৭৩ সালে, এই সংশোধনের প্রধান সংশোধনী ছিল যুদ্ধাপরাধীসহ অন্যান্য মানবতা বিরোধী অপরাধের বিশেষ করে বিচার করা। তৎকালীন আইন মন্ত্রী মনোরঞ্জন ধর বিলটি সংসদে উপস্থাপন করেন এবং ২৫৪ * 0 ভোটে বিলটি পাশ হয়। 

২ তম সংবিধান সংশোধনী ২২ শে সেপ্টেম্বর ১৯৭৩ সালে, এই সংশোধনীতে সংবিধানের কয়েকটি অনুচ্ছেদ (২৬,৬৩,৭২,১৪২) সংশোধনী আনা হয়। এর কারণ ছিল অভ্যন্তরীণ গোলযোগ বা বহিরা আক্রান্তদের দেশের নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক জীবন বাধাগ্রস্ত হলে জরুরি অবস্থা ঘোষণার বিধান চালু করা হয়। এ বিলটি পাসের দুই দিনের মাথায় ২২ শে সেপ্টেম্বরে এটি রাষ্ট্রপতির অনুমোদন পায়।

৩ তম সংবিধান সংশোধনী ২৩ শে নভেম্বর ১৯৭৪ সালে, এই সংশোধনীর মাধ্যমে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত চুক্তি অনুমোদন এবং চুক্তি অনুযায়ী ছিটমহল ও অপদলি ও জমি বিনিময়ের বিধান প্রণয়ন করে।

৪ তম সংবিধান সংশোধনী ২৫ শে জানুয়ারি ১৯৭৫ সাল, এটি বাংলাদেশের শাসন ব্যবস্থা পরিবর্তনের ঘটনা, সংসদীয় শাসন পরিবর্তন করে রাষ্ট্রপতি শাসিত শাসন চালু করা হয়। বহুদলীয় রাজনীতির পরিবর্তে একদলীয় রাজনৈতিক প্রত্যাবর্তন এবং সংশোধনীর মূল বিষয়। 

৫ তম সংবিধান সংশোধনী ৬ এপ্রিল ১৯৭৯ সাল, এর কারণ ছিল সামরিক সরকারের কর্মকাণ্ডের বৈধতা দান এর মধ্যে বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম সংযোজন করা। প্রথম অস্থায়ী পাস হলেও এটি ২০১০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে অবৈধ ঘোষিত হয়। 

৬ তম সংবিধান সংশোধনী ৮ জুলাই ১৯৮১ সালে, এখানে বিভিন্নভাবে যে বিষয়গুলো পালন করা হয় তার মূল বিষয় ছিল উপরাষ্ট্রপতি পদে বহাল থেকে রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচনের বিধান নিশ্চিত করা হয়। সংসদে নেতা আজিজুর রহমানের উত্থাপিত করে বিলটি পাস করেন রাষ্ট্রপতির অনুমোদন পায় ওই বছরের ১০ শে জুলাই। 

৭ তম সংবিধান সংশোধনী ১১ ই নভেম্বর ১৯৮৬ সালে, ১৯৮২ সালের ২৪ শে মার্চ থেকে শুরু করে ১৯৮৬ সালের ১০ ই নভেম্বর পর্যন্ত সামরিক শাসন চলে, সে সময় ১৯৮৬ সালের ১১ নভেম্বর জাতীয় সংসদে সপ্তম সংশোধনীর মাধ্যমে এইচ এম এরশাদের এই সামরিক শাসন বৈধতা দেয়। তবে ১১ ই নভেম্বর একটি রাষ্ট্রপ্রধান পায় তবে পঞ্চম সংশোধনীর মতো এই সংশোধনীকে ২০১০ সালের ২৬ শে আগস্ট বাংলাদেশের উচ্চ আদালত থেকে অবৈধ ঘোষণা করে। 

৮ তম সংবিধান সংশোধনী ৭ জুন ১৯৯৮ সালে, এই সংশোধনে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অনুচ্ছেদ যেমন, ২,৩,৫, ৩০, ১০০ পরিবর্তন আনা হয়। এখানে রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে ইসলামকে স্বীকৃতি দেওয়া হয় ঢাকার বাইরের ছয়টি জেলায় হাইকোর্টের স্থায়ী রেঞ্জ স্থাপন করে বিধান চালু করা হয়। ডাক্তার এর নাম ঢাকা এর বাঙালি এবং বাংলাদেশিকে পরিবর্তন হয়। সংসদ নেতা ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ পাস করেন।

৯ তম সংবিধান সংশোধনী ১০ জুলাই ১৯৮৯ সালে, এই সংশোধনী রাষ্ট্রপতি ও উপরাষ্ট্রপতি কে নিয়ে কিছু বিধান সংযোজন করে। এই সংশোধনীর আগে রাষ্ট্রপতি ও উপরাষ্ট্রপতি ইচ্ছামত রাষ্ট্রপ্রতি পদের জন্য নির্বাচন করতে পারতেন। পরিবর্তন করে রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচনের সঙ্গে একই সময়ে উপরাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচনের অনুষ্ঠান করা হয় রাষ্ট্রপতি পদে কোন ব্যক্তির পরপর দুটি মেয়াদ দায়িত্ব পালন করা সীমাবদ্ধ রাখা হয়। 

১০ তম সংবিধান সংশোধনী ১২ ই জুন ১৯৯০ সাল, এই সংশোধনীতে রাষ্ট্রপতির কার্যকালের মেয়াদ শেষ হওয়ার পূর্বে ১৮০ দিনের মধ্যে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ব্যাপারে একটি সংবিধান তৈরি করতে হবে। যা ১২৩/২ অনুচ্ছেদে বাংলা ভাষা সংশোধন ও সংসদে মহিলাদের ৩০ টি আসন আরো ১০ বছর কালের জন্য সংরক্ষণ করার বিধান করা হয়। 

১১ তম সংবিধান সংশোধনী ৬ আগস্ট ১৯৯১ সালে, এর মাধ্যমে প্রধান বিচারপতি শাহাবুদ্দিন আহমেদ এর উপরাষ্ট্রপতি হিসেবে নিয়োগ দান বৈধ ঘোষণা করা হয়। আবার অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি বিচারপতি শাহাবুদ্দিন আহমদ প্রধান বিচারপতির পদে ফিরে যাওয়ার সংবিধান পাস করা হয়। মির্জা গোলাম হাফিজ এটি পাস করেন। 

১২ তম সংবিধান সংশোধনী ৬ আগস্ট ১৯৯১ সালে এ সময় ১৭ বছর পর দেশে পুনরায় সংশোধনীয় সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়। এছাড়া উপরাষ্ট্রপতির পদে বিলুপ্ত হয় সংশোধনীটি উপস্থাপন করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। বিপুল ভোটে পাস হয় এবং বিল্টু সরকার ও বিরোধী দলের ঐক্যমতের ভিত্তিতে পাশ হয়। 

১৩ তম সংবিধান সংশোধনী ২৭ শে মার্চ ১৯৯৬ সালে, এ সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য নিরপেক্ষ দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা করা হয়। বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী জমিরউদ্দিন এই সংবিধানটি উদযাপন করেন যা বিপুল পরিমাণ ভোটে পাস হয়। 

১৪ তম সংবিধান সংশোধনী ১৬ ই মে ২০০৪ সালে হয়ে থাকে যার মূল কারণ ছিল সংরক্ষিত মহিলা আসন ৩০ টি থেকে ৪৫ টি করা। যা সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতির অবসরের সময়সীমা ৬৫ থেকে ৬৭ বছর করা। এবং রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি এবং সরকারি ও আধা সরকারি স্থায়িত্ব শাসিত প্রতিষ্ঠান ও বিদেশের বাংলাদেশ মিশনের প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কি ছবি প্রদর্শনের বিধান করা হয়। 

১৫ তম সংবিধান সংশোধনী, ৩০ জুন ২০১১ সালে সংশোধনীত পাস করা হয়। এর দ্বারা সংবিধানের ধর্মনিরপেক্ষতা ও ধর্মীয় স্বাধীনতা পুনর্বাহন করা হয় এবং রাষ্ট্রীয় উন্নতি হিসেবে জাতীয়তাবাদ সমাজতন্ত্র গণতন্ত্র এবং ধর্মনিরপেক্ষতায় নীতি সংযোগ করা হয়। এছাড়াও মহিলাদের সংসদে আসন ৪৫ থেকে ৫০ এ করা হয়। আরো অনুচ্ছেদ ৭ ক খ অনুচ্ছেদ সংশোধন করে সংবিধান বহির্ভূত পন্থা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখলের পথ রুদ্ধ করা হয়। 

১৬ তম সংবিধান সংশোধনী, ১৭ ই সেপ্টেম্বর ২০১৪ এই সংশোধনীতে ১৯৭২ সালের সংবিধান ৯৬ অনুচ্ছেদ পুনরুদ্ধারের মাধ্যমিক বিচারপতিদের অপসারণ এর ক্ষমতা সংসদকে ফিরিয়ে দেওয়ার বিধান পাস করা হয়। 

১৭ তম সংবিধান সংশোধনী কবে হয়? ৮ ই জুলাই ২০১৮ সাল, এই সংশোধনীতে সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচনে বিধি আরো ২৫ বছর বহাল রাখার প্রস্তাব এই সংবিধানের শেষ সংশোধনের বিল পাস হয়। সংসদে ৩৫০ জন সংসদ সদস্যের মাধ্যমে ২৯৮ ভোটে বিল পাস হয় আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এ প্রস্তাব করেন যা ২৯ শে জুলাই ২০১৮ পাস হয়ে যায়।

আশা করি আপনি বাংলাদেশের সংবিধানের যে সংবিধান সংশোধনী ও সম্পর্কিত বিষয় রয়েছে সেই বিষয়ে একটি স্পষ্ট ধারণা পেয়েছেন। বাংলাদেশের সংবিধানে মোট ১৭ বার সংবিধান সংশোধিত হয়েছে। আজকের এছাড়াও আমরা আরো যে বিষয়গুলো জানবো তা পর্যায়ক্রমে পড়ে আপনি জেনে নিতে পারেন এখানে উপস্থাপন করা হবে সংবিধানের অনুচ্ছেদ সমূহ এবং সংবিধানের প্রধান বৈশিষ্ট্য। 

বাংলাদেশের সংবিধানের ধারা কয়টি ও কি কি 

বাংলাদেশের সংবিধানের ধারা কয়টি ও কি কি এ বিষয়ে সম্পর্কে তথ্য গুলো দেখুন, যা আপনাকে বাংলাদেশের সংবিধানের ধারা সম্পর্কে জানতে সাহায্য করবে। বাংলাদেশের সংবিধানে মোট ১৫৩ টি ধারা রয়েছে এই ১৫৩ ধারাকে মোট ১১ টি ভাগে ভাগ করা হয়। এবং এই ভাগ্যের সাথে সাতটি তফসিল সংযুক্ত আছে। 

ক্রমিক ভাগের নাম অনুচ্ছেদ (ধারা) সংখ্যা বিষয়বস্তু সংক্ষেপে
০১ প্রজাতন্ত্র অনুচ্ছেদ ১–৭A রাষ্ট্রের নাম, এলাকা, সার্বভৌমত্ব
০২ রাষ্ট্রের মূলনীতি অনুচ্ছেদ ৮–২৫ জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা
০৩ মৌলিক অধিকার অনুচ্ছেদ ২৬–৪৭A নাগরিক অধিকার, আইনের শাসন, মত প্রকাশের স্বাধীনতা
০৪ নির্বাহী বিভাগ অনুচ্ছেদ ৪৮–৬৮ রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রিসভা
০৫ আইনসভা অনুচ্ছেদ ৬৫–৯৩ জাতীয় সংসদ, সদস্য নির্বাচন ও আইন প্রণয়ন প্রক্রিয়া
০৬ বিচার বিভাগ অনুচ্ছেদ ৯৪–১১৬A সুপ্রিম কোর্ট, বিচারপতি নিয়োগ, ক্ষমতা ও দায়িত্ব
০৭ নির্বাচন কমিশন অনুচ্ছেদ ১১৮–১২৬ নির্বাচন কমিশনের গঠন, দায়িত্ব ও স্বাধীনতা
০৮ মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক অনুচ্ছেদ ১২৭–১৩২ রাষ্ট্রের হিসাব নিরীক্ষণ ও প্রতিবেদন
০৯ সরকারি কর্মসংস্থান অনুচ্ছেদ ১৩৩–১৪৭ সরকারি চাকরি, নিয়োগ ও শর্তাবলী
১০ স্থানীয় সরকার অনুচ্ছেদ ৫৯–৬০ ইউনিয়ন, উপজেলা, পৌরসভা, সিটি কর্পোরেশন
১১ বিবিধ অনুচ্ছেদ ১৪৮–১৫৩ শপথ, সংবিধান সংশোধন, কার্যকারিতা ইত্যাদি

উক্ত টেবিল থেকে আপনি বুঝতে পারছেন যে বাংলাদেশের সময়ের ধারা কয়টি ও কি কি এবং কোন ধারার মধ্যে কোন ধরনের বিষয়বস্তু রয়েছে তার সংক্ষিপ্ত একটি বিশ্লেষণ আপনাদের সামনে উপস্থাপন করেছি যা দেখে আপনি খুব সহজেই বাংলাদেশের সংবিধানের মোট ধারা এবং এর ভাগ সমূহ বুঝতে পারবেন।

আরো পড়ুনঃ বাংলাদেশের নাগরিকত্ব লাভের ৮টি উপায় গুলো বিস্তারিত জানুন 

অনেকেই বাংলাদেশের সংবিধানের অনুচ্ছেদ সমূহ সম্পর্কে জানতে চাই। তারা বাংলাদেশের ১৫৩ টি অনুচ্ছেদ সম্পর্কে জানার জন্য উপরে উল্লেখিত টেবিলটি দেখে নিতে পারেন এক নজরে। প্রতিটি অনুচ্ছেদে বিভিন্নভাবে মল্লিক যে বিষয়গুলো রয়েছে তা উপস্থাপন করা হয়েছে। প্রজাতন্ত্র, রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি, মৌলিক অধিকার, নির্বাহী বিভাগ। আইন বিভাগ,  বিচার বিভাগ।

বাংলাদেশের সংবিধানের প্রধান বৈশিষ্ট্য কয়টি 

বাংলাদেশের সংবিধানের প্রধান বৈশিষ্ট্য কয়টি ও কি কি এ বিষয়গুলো দেখুন যা আপনাকে সহজেই আপনার রাষ্ট্র সম্পর্কে জানতে সাহায্য করবে। এখন আমরা দেখব বাংলাদেশের যে মৌলিক এবং প্রধান বৈশিষ্ট্য রয়েছে সেগুলো কয়টি ও কি কি। সাধারণত বাংলাদেশের প্রধান সংবিধান ১২ টি সেগুলো দেখুন।

বাংলাদেশের সংবিধানের প্রধান বৈশিষ্ট্য কয়টিঃ 

  1. রাষ্ট্রপরিচালনার মূলনীতি (গণতন্ত্র, জাতীয়তাবাদ, ধর্মনিরপেক্ষতা) 
  2. প্রস্তাবনা 
  3. মৌলিক অধিকার 
  4. জনগণের সার্বভৌমত্ব (প্রজাতন্ত্রের সকল ক্ষমতার উৎস জনগণ) 
  5. বিচার বিভাগের স্বাধীনতা 
  6. সংসদীয় সরকার ব্যবস্থা 
  7. এক কক্ষ বিশিষ্ট জাতীয় সংসদ 
  8. লিখিত সংবিধান 
  9. এককেন্দ্রিক রাষ্ট্র 
  10. সার্বজনীন ভোটার অধিকার (১৮ বছর থেকে উপরে সকল নাগরিকের জন্য) 
  11. মৌলিক অধিকারের নিশ্চয়তা 
  12. ধর্মনিরপেক্ষতা 

বাংলাদেশ সংবিধানের প্রধান বৈশিষ্ট্য সমূহ উল্লেখ করলাম যা দেখে আপনি বুঝতে পারবেন বাংলাদেশের মূল বিষয়গুলো কি? মৌলিক অধিকারের নিশ্চয়তা সংসদীয় পদ্ধতির সরকার সার্বজনীন ভোটার অধিকারসহ স্পষ্টতা ও সুষম ও প্রকৃতি এর মত অন্তর্ভুক্ত রয়েছে যা রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য প্রয়োজন। 

বাংলাদেশের সংবিধান প্রণয়নের ইতিহাস 

বাংলাদেশের সংবিধান প্রণয়নের ইতিহাস সম্পর্কে জেনে নিন। বাংলাদেশের সংবিধান প্রণয়নের ইতিহাস অত্যন্ত গৌরবময় ও ঐতিহাসিক। সাধারণত ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জনের পর থেকে নবগঠিত রাষ্ট্রের শাসনব্যবস্থা পরিচালনা করার জন্য একটি নিজস্ব সংবিধানের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়।  

বাংলাদেশের সংবিধান প্রণয়নের ইতিহাস 

সেইখান থেকে স্বাধীনতার পর ১৯৮২ সালের ১১ এপ্রিল গঠিত হয় সংবিধান প্রণয়ন কমিটি। এই কমিটির সভাপতি ছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। আহায়ক ছিলেন ডক্টর কামাল হোসেন। তিনি এ কমিটি মাত্র সাত মাসের মধ্যে খসড়া সংবিধান প্রস্তুত করে। পাশাপাশি ১৯৭২ সালের ৪ নভেম্বর জাতীয় সংসদের সংবিধানটি সম্মিলিতভাবে গৃহীত হয়। 

আরো পড়ুনঃ নাগরিক সেবা ও ই-কমার্সের  ৮টি সুবিধা ও অসুবিধা সমূহ বিস্তারিত জানুন 

১৬ ই ডিসেম্বর ১৯৭২ সালের বিজয় দিবস এটি কার্যকর হয়। এছাড়াও বাংলাদেশের সংবিধান চারটি মূলনীতি রয়েছে যা জাতীয়তাবাদ সমাজতন্ত্র গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার উপর ভিত্তি করে প্রণীত। জনগণের সার্বভৌমত্ব ও মৌলিক অধিকারের কথা নিশ্চিত করি সংবিধান প্রণয়নের মাধ্যমে বাংলাদেশের বিশ্বের অন্যতম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। 

বর্তমানে ও বাংলাদেশের  এই সংবিধানে বেহাল রয়েছে এর মূল ভিত্তি হিসেবে। বাংলাদেশের সংবিধানের প্রণয়ন কমিটির প্রধান ছিল ডক্টর কামাল হোসেন। কমিটির একমাত্র মহিলা সদস্য রাজিয়া বানু। মোট এই সদস্যদের মধ্যে সংখ্যা ছিল ৩৪ টি যা দিয়েই সংবিধানের প্রণয়নের একটি কমিটি তৈরি করা হয়।

সংবিধান নিয়ে সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন এবং উত্তর 

প্রশ্নঃ রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন কোনটি? 

উত্তরঃ রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন হলো সংবিধান যা মৌখিক দলিল সংবিধান হলো রাষ্ট্রপরিচালনার মূল ভিত্তি ও মৌখিক দলিল হিসেবে বিবেচিত। রাষ্ট্রপরচালনা অসামঞ্জস্য বজায় রাখে। 

প্রশ্নঃ বাংলাদেশের সংবিধানের জনক কে?

উত্তরঃ বাংলাদেশের সংবিধানের জনক কামাল হোসেন, বাংলাদেশের একজন প্রতিষ্ঠাতা নেতা আইনজীবী এবং রাজনীতিবিদ তিনি বাংলাদেশের সংবিধানের জনক হিসেবে পরিচিত। এছাড়াও জাত ভারতীয় উপমহাদেশের ধর্মনিরপেক্ষ গণতন্ত্রের আইকন হিসেবে বিবেচিত। 

প্রশ্নঃ বাংলাদেশের সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান কোনটি? 

উত্তরঃ বাংলাদেশের সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান গুলোর মধ্যে রয়েছে নির্বাচন কমিশন, সরকারি কর্ম কমিশন, আটনি জেনারেল এবং মহা হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়। 

প্রশ্নঃ বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা কে? 

উত্তরঃ বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা হলো বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশের প্রথম সরকারের নেতৃত্বে দেন সাড়ে তিন বছর সময়কাল। 

প্রশ্নঃ বাংলাদেশের পুরো নাম কি? 

উত্তরঃ বাংলাদেশের পুরনো সংবিধান অনুযায়ী সাংবিধানিক নাম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ। এর ইংরেজি নাম, the people's republic of Bangladesh.

প্রশ্নঃ বাংলাদেশের জাতীয় দিবস কয়টি? 

উত্তরঃ বাংলাদেশের ১৫ টি সরকারি ছুটি রয়েছে সাতটি ধর্মনিরপেক্ষ জাতীয় ছুটির পাশাপাশি মুসলিম এবং অমুসলিম এর চারটি করে ধর্মীয় ছুটি রয়েছে।

প্রশ্নঃ  বাংলাদেশের পূর্ব নাম কি কি ছিল? 

উত্তরঃ বাংলাদেশের পূর্ব নাম শিল্প পূর্ব পাকিস্তান, তারও পূর্বে ছিল পূর্ববঙ্গ বা পূর্ব বাংলা। 

শেষ মন্তব্য বাংলাদেশের সংবিধান কত তারিখে কার্যকর হয় 

বাংলাদেশের সংবিধান কত তারিখে কার্যকর হয় এ বিষয়ে সম্পর্কে আমরা ইতিমধ্যে সকল গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জেনেছি। যে তথ্যগুলো থেকে নিশ্চিত হয় যে বাংলাদেশের সংবিধান প্রাইস বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কারণে পরিবর্তিত হয়েছে। এই পরিবর্তনের কারণ বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব গণতান্ত্রিকতা ও ধর্ম নিরপেক্ষতা বজায় রাখার জন্য। 

এছাড়াও বাংলাদেশ সংবিধান বিভিন্ন উন্নয়নের জন্য পরিবর্তিত হয়েছে কিছু নিয়ম পরিবর্তিত হয়েছে অসুবিধা এবং বিভিন্ন সময়ে তা আবার নতুন করে সংযোজন করা হয়েছে। তবে মূল কথায় বাংলাদেশের ১৯৭২ সালের যে সংবিধান রয়েছে এই সংবিধানটি মূল সংবিধান এবং এর অনেক পরিবর্তন প্রত্যাবর্তন করেছেন বিভিন্ন প্রয়োজন এবং সুবিধার জন্য আশা করি বুঝতে পেরেছেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মুক্তআঁখি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

Post Page Ad Right After Title