তওবার নামাজ পড়ার নিয়ম - তওবার নামাজের সময় বিস্তারিত জানুন
তওবার নামাজ পড়ার নিয়ম আমরা অনেকেই জানি আবার অনেকেই জানিনা। তাই আজ আমরা জানবো তওবা নামাজ পড়ার সঠিক নিয়ম। উপযুক্ত সময় তওবার নামাজ পড়ার জন্য যে সময় সবচাইতে বেশি উপযুক্ত মনে করা হয়।
সাধারণত তওবা নামাজ হল এমন একটি বিশেষ নামাজ যা মানুষ নিজের গুনাহ বা পাপের ক্ষমা চাওয়ার জন্য আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে পড়ে থাকেন। এসময় এই নামাজ পড়ে মুসলমান ব্যক্তিরা তাদের আন্তরিকভাবে গুনাহসমূহের জন্য অনুতপ্ত হয়ে আল্লাহতালার কাছে ফিরে আসে।
পোস্ট সুচিপত্রঃ তওবার নামাজ পড়ার নিয়ম - তওবার নামাজের সময় বিস্তারিত জানুন
- তওবার নামাজ পড়ার নিয়ম জানুন
- তওবার নামাজের দোয়া সম্পর্কে জানুন
- তওবার নামাজ পড়ার সময়
- তওবা করার সঠিক নিয়ম
- তওবার নামাজ পড়ার নিয়ম নিয়ে সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর
- লেখক এর শেষ মন্তব্য তওবার নামাজ পড়ার নিয়ম
তওবার নামাজ পড়ার নিয়ম জানুন
তওবার নামাজ পড়ার নিয়ম আমাদের জানা উচিত কারণ এই নামাজ টি পড়া হয় মানুষের গুনাহ মাফ করার জন্য। অনেক হাদিসে প্রমাণিত রয়েছে যে কোনো সংঘটিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই নামাজ পড়া উচিত। গুনাহ বেশি পরিমাণ হয়ে গেলে তওবার নিয়মে যদি নামাজ পড়া হয় তাকেই মৃত তওবার নামাজ বলে। বিভিন্ন ইসলাম গবেষণা এবং আলমের মতে তওবার নামাজ পড়া মুস্তাহাব।
আরো পড়ুনঃ সকল কাজা নামাজ ও ফজরের কাজা নামাজ পড়ার নিয়ম ও সময় জেনে নিন
তওবার নামাজ পড়ার নিয়ম,
সাধারণত প্রথমে আমাদের কি মনে মনে নিয়ত করে নিতে হবে। বিনিয়োগ আপনি আরবি বাংলাতেও করতে পারেন যা নফল নামাজের মত। এবং আপনাকে মনে মনে নিয়ত করতে হবে এই বলে যে, আমি আমার গুনাহের ক্ষমার জন্য আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে দুই রাকাত তওবার নামাজ আদায় করছি। এরপর আপনাকে দুই রাকাত তওবার নামাজ পড়ার জন্য নফল নামাজের মতো নামাজের দাঁড়াতে হবে।
- এখানে অনেকেই আছে যারা তওবার নামাজ কত রাকাত এ বিষয়ে জানতে চাই তাই আপনি যদি তওবা নামাজ সম্পর্কে বিস্তারিত হাদিস এবং বিভিন্ন ফজিলত সম্পর্কে জানতে চান তাহলে অবশ্যই নিচে দেওয়া তথ্যগুলো আপনাকে উপকার করবে। এখানে সহি হাদিস এবং ইসলামের আলোতে আলোচনা করা হয়েছে তওবার নামাজ কিভাবে পড়বেন কত রাকাত পড়বেন এবং কি কি নিয়ম ও দোয়া অনুসরণ করবেন।
- এরপর দুই রাকাত দুই রাকাত করে নামাজ পড়তে হবে তবে প্রথম রাকাতে সুরা ফাতেহার পর আপনি সূরা কাফিরুন পড়তে পারেন এটা ভালো হয়।
- দ্বিতীয়ত আপনি দ্বিতীয় রাকাতে সুরা ফাতেহার পর সূরা ইখলাস পড়তে পারেন যা উত্তম মনে করা হয়।
- নামাজ শেষে আন্তরিকভাবে আল্লাহ তায়ালার কাছে ক্ষমা চাইবেন। আপনার করা গুনাহ গুলোর কথা স্মরণ করে সেই গুনাহগুলো থেকে দূরে থাকার জন্য অনুশোচনা মূলক আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইবেন। আল্লাহ তাহলে আর কাছে দৃঢ় প্রতিজ্ঞা এবং ভবিষ্যতে সে গুনাহগুলো থেকে বিরত থাকলে অবশ্যই আল্লাহতালা আপনার গুনাহ গুলো মাফ করে দিতে পারে।
- সর্বশেষ নামাজ শেষে আপনি একটি দোয়া করতে পারেন যে দোয়াটি পড়ন্ত ফজিলতপূর্ণ, এই দোয়াটি হলো আস্তাগফিরুল্লাহ রাব্বি মিন কুল্লি জাম্বিউ ওয়াতুবু ইলাইহি।
- এছাড়াও বিভিন্ন হাদিস শরীফের কোন কুরআনের দৃষ্টিতে যে বিষয়গুলো রয়েছে সে বিষয়গুলো সম্পর্কে আমাদের জানা উচিত। সরাসরি কুরআনে এ বিষয়গুলো না থাকলেও কিছু হাদিসে এর বর্ণনা করা রয়েছে। নিচে বিভিন্ন হাদিস সমূহ আপনাদের সুবিধার্থে উপস্থাপন করা হলো।
- তওবার নামাজ নিয়ে হাদিসে বর্ণিত আলোচনা জানুন এই তোমার নামাজকে অনেকেই নামাজ পড়তে বাবা সালাতুত তওবা নামেও জেনে থাকে যার বিভিন্ন হাদিস রয়েছে আমরা পর্যায়ক্রমে সে হাদিস গুলো দেখি। বিভিন্ন হাদিস শরীফ রয়েছে যেগুলোতে তওবার নামাজের ফজিলত সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সাহাবায়ে কেরাম তওবার নামাজ পড়তেন বলে অনেক প্রমাণ রয়েছে। আসমা ইবনুল হাকাম রাঃ থেকে বর্ণিত,
- তিনি বলেন আমি আলীর আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম কে বলতে শুনেছি। তিনি বলেন আবু বক্কর রাঃ আমাকে একটি হাদিস বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, আবু বকর রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু আমাকে একটি হাদিস বর্ণনা করেছেন যেখানে মহানবী বলেন, যখন কোন বান্দা কোন ধরনের গুনাহ করে, উত্তম রূপে অজু করে দাঁড়িয়ে দুই রাকাত নামাজ আদায় করে এবং আল্লাহর কাছে গুনার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে, নিশ্চয়ই আল্লাহ তাকে ক্ষমা করেন (আবু দাউদ হাদিস নাম্বার ১৫২১)।
- এর জন্য আরো যে উত্তম বিষয় রয়েছে সেটা হচ্ছে উত্তমরূপে অজু করে দুই রাকাত নামাজ পড়া এবং তওবা করা। সাধারণত তওবা করার সময়সীমা রয়েছে এখানে তিনটি মুহূর্ত আসার আগ পর্যন্ত আল্লাহতালা বান্দার তওবা কবুল করে থাকেন। এই তিনটি মুক্ত পার হয়ে গেলে আর কবুল হয় না বলে জানা যায় বিভিন্ন হাদিসে সেই তিনটি মুহূর্ত সম্পর্কে আমরা এখন জানবো। প্রথমে রয়েছে এবং জীবনের চলা পর্যন্ত থাকে।
- মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সময় আপনি তওবা করতে পারেন তবে আপনি যদি বারবার তওবা করেন এবং অন্যায় কাজ করেন সেক্ষেত্রে আল্লাহতালা আপনার প্রতি নারাজ হতে পারেন। তাই আপনাকে অবশ্যই তওবা করলে আপনাকে নিজেকে নিয়ন্ত্রিত এবং সেই সকল খারাপ কাজ থেকে অবশ্যই দূরে রাখতে হবে। (সূরা নিসা আয়াত নাম্বার ১৮) দ্বিতীয় হচ্ছে আজাব চলে আসার আগ পর্যন্ত, (সূরা মুমিনুন আয়াত নম্বর ৮৫)।
- এবং সর্বশেষ পশ্চিম আকাশে সূর্যোদয় হওয়ার আগ পর্যন্ত (মুসলিম, হাদিস ৬৭৫৪) এই সময়গুলো মধ্যে আপনি তওবার নামাজ পড়তে পারবেন। উপরে বিস্তারিত তবার নামাজ পড়ার নিয়ম উল্লেখ করেছি তবে সংক্ষেপে আরেকটু বলে যায় যে, তওবার নামাজ পড়ার জন্য আপনি যে কোন সময় যে কোন দোয়া এবং যে কোন মুহূর্তে করতে পারেন তবে আপনাকে অবশ্যই পবিত্র অবস্থায় নামাজ আদায় করতে হবে।
- তবে প্রথমে উত্তপ্ত প্রভাবে ওযু করতে হবে তারপর একাকৃত নফল নামাজের জন্য দুই রাকাত নামাজ পড়তে হবে। এই নামাজের জন্য নির্দিষ্ট কোন সূরা নাই তাই আপনি যে কোন সূরা দিয়ে তওবার নামাজ পড়তে পারেন এই নামাজের অজু নামাজের মাঝখানে কোন দুনিয়াবী কথাবার্তা বা কাজ করা কথা ভাবা থেকেও নিজেকে বিরত রাখতে হবে। বুখারী শরীফ হাদিস নং ১৬৯ বলা হয়েছে, দুই রাকাত নামাজ আদায় করবে এবং মাঝখানে দুনিয়ার কোন খেয়াল করবে না তার আগেই গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে।
এছাড়াও নামাজ শেষে আল্লাহর তসবি পড়বে আল্লাহর প্রশংসা করবে এবং ইফতেখার পড়বে মহান আল্লাহর কাছে দোয়া করবেন। এই বিশেষ ব্যবস্থা করে দিয়েছেন কারণ তার বান্দারা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরনের খারাপ কাজের সাথে যুক্ত থাকবে আবার ক্ষমা চাওয়ার জন্য আল্লাহতালার কাছে ফিরে আসবে তাই এই বিষয়গুলো খুব সহজেই আমাদের বুঝে নেওয়া উচিত এবং আল্লাহতালার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা উচিত এবং যেই সকল ভুল কাজের জন্য ক্ষমা চাচ্ছেন সেই সকল কাজ আর যেন পুনরাবৃত্তি না হয়।
তওবার নামাজের দোয়া সম্পর্কে জানুন
তওবার নামাজের দোয়া আমাদের জানা উচিত কারণ আমরা বিভিন্ন সময় জেনে এবং অজানা ভাবে অনেক খারাপ কাজের সাথে যুক্ত করে এবং বিভিন্ন গুনাহের কাজ করে থাকি। এই সময় অনেকেই আবার বিভিন্ন ভুল বুঝতে পারার পরে আল্লাহতালার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে যাকে তওবার নামাজ বলে। এই তোবা নামাজ পড়ার জন্য একটি দোয়া রয়েছে যা আপনি পড়লে অনেক ফজিলত পাবেন।
আরো পড়ুনঃ তাহাজ্জুদ নামাজের সময় সূচী ২০২৩ - তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ত ও ফজলত দেখুন
তওবার নামাজের দোয়া আরবি, আল্লাহুম্মা আনতা রাব্বি, লা-ইলাহা ইল্লা আনতা খনাকতানি, ওয়া আনা আবদুকা, ওয়ানা আলা আহদিকা, ওয়াদিক মাস্তা তাতু, আউযুবিকা মিন শাররিমা সানা তু, আবু উ লাকা বিনি মাতিকা আলাইকা ওয়া উ বিজাম্বি ফিরলি ফা ইন্নাহু লা ইয়া গাফিরুজ জুনুবা ইল্লা আনতা।
বাংলা অর্থ, হে আল্লাহ, আপনি আমার রব, আপনি ছাড়া কোন উপাস্য নেই, আমাকে আপনি সৃষ্টি করেছেন, আমি আপনার বান্দা, আমি যথাসাধ্য আপনার সঙ্গে কৃত প্রতিশ্রুতির উপর প্রতিষ্ঠিত থাকবো, আমি আমার নিকৃষ্ট আমল থেকে আপনার কাছে আশ্রয় চাই, আপনার যে অসংখ্য নিয়ামত ভোগ করছে এজন্য কৃতজ্ঞতা স্বীকার করছি, আমি আমার কৃত অপরাধ স্বীকার করছি, অতএব আপনি আমাকে ক্ষমা করে দিন আপনি ছাড়া অপরাধ ক্ষমা করার কেউ নেই, (আবু দাউদ হাদিস ৫০৭০)।
তওবার নামাজ আরবি নিয়ত দোয়া এবং তওবা নামাজের নিয়ত বাংলা উচ্চারণ আপনাদের সামনে উপস্থাপন করা হয়েছে। যাতে আপনি খুব সহজে তোমার নামাজের নিয়ত বাংলা উচ্চারণ করে পড়তে পারেন। পাশাপাশি এর অর্থ উল্লেখ করা হয়েছে যাতে আপনি বাংলাতেও এই বিষয়গুলো আল্লাহতলার কাছে মন খুলে বলতে পারেন। অনেকেই আছে যারা অন্য ভাষা জানে না শুধু নিজের দেশের ভাষা জানে তাই আল্লাহ সকল ভাষার স্রষ্টা আপনি সব ভাষাতে আল্লাহতালার কাছে ক্ষমা চাইতে পারেন।
তওবার নামাজ পড়ার সময়
তওবার নামাজ পড়ার জন্য উপযুক্ত সময় আসলেই রয়েছে তবে এই সময়টি উপরে উল্লেখ করা হয়েছে যে সময় গুলোর মধ্যে আপনি যে কোন সময় নামাজ পড়তে পারেন। আল্লাহ সকল বিষয়ে অবগত থাকেন তাই আপনি যদি চান তাহলে অবশ্যই আল্লাহ তায়ালাকে কয়েকটি সময় ব্যতীত যে কোন সময় আল্লাহতালার কাছে তওবর জন্য নামাজ পড়ে ক্ষমা প্রার্থনা করতে পারেন।
আরো পড়ুনঃ তারাবি নামাজের নিয়ম নিয়ত দোয়া ফজিলত ও গোপন টিপস জানুন
- উপরের বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে তার পরেও আমি এই তিনটা বিষয় আপনাদের সামনে উপস্থাপন করলাম। প্রথমে আপনাকে মাথায় রাখতে হবে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আল্লাহতালা আপনার তওবার গুনাহ মাফ করে। সূরা নিসা ১৮ নং আয়াতে বলা হয়েছে।
- এছাড়া আপনি আজাব চলে আসার আগ পর্যন্ত মানে আল্লাহ তায়ালার কষ্ট বা শাস্তি শুরু হওয়ার আগে যদি আল্লাহতালার কাছে শাস্তির জন্য বা সেই পাপ কাজের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন তাহলে অবশ্যই আল্লাহতালা ক্ষমা করে দেন। এটা বলা হয়েছে সূরা মুমিনুন ৮৫ নং আয়াতে।
আরো একটি স্পষ্ট কথা বলে দেয়া হয়েছে যা জীবনের পশ্চিম আকাশে সূর্যউদয় হওয়ার আগ পর্যন্ত আপনি আল্লাহতালার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করতে পারেন এতে আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে আপনি সঠিকভাবে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন তাহলেও আল্লাহ অপরিসীম ক্ষমার এবং দয়ালু তাই তিনি যেকোনো সময় ক্ষমা করে দিতে পারেন। তবে একটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে সেটা হচ্ছে আল্লাহতালা ক্ষমা করেন ভুলের কিন্তু ভন্ডামীর নয় কারণ আপনি বারবার জেনে শুনে ভুল করে বারবার ক্ষমা চাইবেন সে বিষয়টি আল্লাহ কখনোই ক্ষমা করবেন না।
তওবা করার সঠিক নিয়ম
এতক্ষণ আমরা জানলাম তওবা করা সম্পর্কে বিভিন্ন তওবার নামাজ পড়ার সঠিক এবং বাস্তব রূপ। যে বিষয়গুলো জেনে আমরা তওবার নামাজ আদায় করি। তবে আমাদের জানা উচিত তওবা করার সঠিক নিয়ম। মুসলিম সমাজে এই নামাজের প্রচলিত থাকলেও অনেকেই এই বিষয় সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানে না এবং সঠিক ধারণা নেই তাই তওবার আক্ষরিক অর্থ ফিরে আসা প্রত্যাবর্তন করা।
- এ বিষয়গুলো সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন হে বিশ্বাসীগণ, তোমরা সকলে আল্লাহর কাছে তওবা করো যাতে তোমরা সফল হতে পারো, সূরা আন নূর আয়াত ৩১।
- এছাড়াও আল্লাহতালা আরো ইরশাদ করেন যে হে বিশ্বাসীগণ তোমরা আল্লাহর নিকট তওবা করো খাঁটি তওবা সূরা আহ রিম আয়াত নং ০৮।
- এছাড়াও আল্লাহ তায়ালার কুরআনের মাধ্যমে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, হে মানবজতি তোমরা আল্লাহর নিকট তওবা করো এবং আল্লাহর নিকট ফিরে আসো প্রত্যাবর্তন কর। মুসলিম হাদিস নং ৭০৩৪।
- ইমাম কুর্তুরী রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু এবং ইমাম নবী রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহুর যাদের কিতাবের উল্লেখ করেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ বেশি বেশি তওবাকারীদের কে ভালোবাসেন সূরা বাকারা আয়াত ২২২।
- আর এভাবে তওবা আপনি সঠিকভাবে তওবা করার মাধ্যমে আল্লাহতালার নিয়ামত দয়া ও ভালোবাসা পাবেন। তবে কিছু শর্ত অবশ্যই আপনাকে মাথায় রাখতে হবে। শর্তগুলো সম্পর্কে একটু জেনে নেওয়া ভালো।
- প্রথমে রয়েছে পাপ পুরোপুরিভাবে ছেড়ে দিতে হবে।
- দ্বিতীয়ত রয়েছে পাপের জন্য সূচনা করতে হল লজ্জিত অনুতপ্ত হতে হবে।
এবং তৃতীয়ত হচ্ছে ওই পাপ তৃতীয়বার না করার সিদ্ধান্ত হবে এবং সংকল্প করতে হবে পূর্ণভাবে যেন কোনভাবেই ওই দ্বিতীয়বার সেই পাপগুলো না হয়। এবং আপনি যদি কোন ব্যক্তি বা মানুষের সাথে খারাপ ব্যবহার করেন তাহলে অবশ্যই সেই ব্যক্তির কাছ থেকে আপনাকে ক্ষমা চেয়ে নিতে হবে কারণ এখানে আল্লাহতালা আপনি কোন ব্যক্তির কাছ থেকে খারাপ কিছু করলে সেই ব্যক্তি ক্ষমা করলে আল্লাহতালা ক্ষমা করে না। এ বিষয়গুলো আপনি পূর্ণভাবে আমল করতে পারলে অবশ্যই আপনার জীবনকে পরিশুদ্ধ করতে পারবেন।
তওবার নামাজ পড়ার নিয়ম নিয়ে সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর
প্রশ্ন: তওবার সবচেয়ে শক্তিশালী দোয়া কোনটি?
উত্তর: তওবার সবচাইতে শক্তিশালী দোয়াটি উপরে উপস্থাপন করা হয়েছে যার অর্থ আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই তিনি ব্যতীত কোন মাবুদ নেই চিরন্তর এবং আমি তার কাছে ফিরে আসছি। (তিরমিজি ও আবু দাউদ শরীফ)।
প্রশ্ন: নামাজের তওবা কিভাবে করবো?
উত্তর: নামাজের জবা কিভাবে করবেন এর জন্য আমি একটি সুন্দর বিষয় তুলে ধরলাম, যা ইসা নবী থেকে কুরআনে বর্ণিত, আমি তোমার সামনে এসে আমার পাপ পূর্ণ পথ থেকে অনুতপ্ত, আমি আমার হৃদয়কে তোমার হাতে তুলে দিচ্ছি যা অহংকার হিংসা ঈর্ষা আলস্য পেটুক, এবং লালসার মতো মন্দ কাজে আক্রান্ত, যে বন্ধন গুলি আমাকে এই বন্ধন গুলির সাথে আবদ্ধ করে এবং আমার হৃদয় যে সমস্ত পাপ করেছে তা উপড়ে ফেলো। আমি প্রার্থনা করি যে তুমি তোমার পরম মূল্যবান রক্ত দিয়ে আমার হৃদয়কে পরিষ্কার করো।
প্রশ্ন: সালাতুত তওবা কি? তওবার নামাজ পড়ার নিয়ম
উত্তর: সালাতুত তওবা হলো এক ধরনের পাপমোচনের জন্য একপ্রকার নফল নামাজ যা কোন পাপ করার পর অনুতপ্ত হয়ে আল্লাহ তাকে ক্ষমা চাওয়ার উদ্দেশ্যে আদায় করা হয়। উপরে বিস্তারিত এ বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে জেনে নিতে পারেন।
প্রশ্ন: কোন সূরাতে বিসমিল্লাহ পড়তে হয় না?
উত্তর: সূরা তওবাতে বিসমিল্লাহ পড়া হয় না এই সূরার শুরুতে বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম লেখা হয় না কারণ এটি কাফেরদের সাথে যুক্তি বাতিল ও তাদের শান্তির কথা বলে, যা বিসমিল্লাহর শান্তি ও নিরাপত্তার বার্তার সাথে সাদৃশপূর্ণ নয়। এটি কুরআনের একমাত্র সূরার শুরুতে বিসমিল্লাহ নেই।
প্রশ্ন: কোন সূরা দুইবার নাযিল হয়েছে?
উত্তর: সূরা ফাতিহা দুইবার নাযল হয়েছে যার প্রথমে মক্কা শরীফ এব দ্বিতীয় মদিনা, এছাড়াও সূরা আন নাম বলে দুইবার বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম রয়েছে।
প্রশ্ন: সূরা তওবার ১১২ এর অর্থ কি?
উত্তর: সূরা তওবা ১১২ নং আয়াতে সে মুমিনদের প্রশংসা করা হয়েছে যারা তওবাকারী ইবাদতকারী কৃতজ্ঞ রোজাদার, ভালো কাজের আদেশদাতা এবং মন্দ কাজ থেকে বিরত থাকেন আল্লাহ তায়ালার কাছে সীমারেখা রক্ষাকারী আল্লাহ তাদের ঈমানদার হিসেবে সংবাদ দিতে বলেছেন।
প্রশ্ন: তওবা কত প্রকার ও কি কি?
উত্তর: তওবার নির্দিষ্ট কোন প্রকার নেই তবে একটিকে সাধারণ ছয়টি বিষয়ে সমষ্টি হিসেবে দেখানো হয়, নিজের কৃতকর্মের জন্য অনুতপ্ত হওয়া, অনাদায়ী ফরজ ওয়াজিব ইবাদত আদায় করা, অন্যের ক্ষতিপূরণ করা, কাউকে কষ্ট দিলে ক্ষমা চাওয়া, ও সে তেমন কোন কাজ করা যাবে না যা দৃঢ় সংকল্প এবং পাপ স্বীকার করা ঔষধের কাছে ক্ষমতা।
লেখক এর শেষ মন্তব্য তওবার নামাজ পড়ার নিয়ম
আপনি হয়তো তওবার নামাজ পড়ার নিয়ম এবং তওবার নামাজ পড়ার উপযুক্ত সময় সম্পর্কে বিস্তারিত জেনেছেন। আজকের এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়লে এ বিষয়গুলো সম্পর্কে আপনি সচেতন ভাবে জানতে পারবেন। এখানে স্পষ্ট উল্লেখ করা হয়েছে যে একটা মানুষ কিভাবে তওবার নামাজ পড়বে এবং প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত কি কি পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
আপনি যদি একজন সচেতন মানুষ হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই তওবার নামাজ পড়তে পারেন কারণ আমরা বিভিন্ন সময় জানা এবং অজানা কারণে বিভিন্ন পাপ কাজের সাথে যুক্ত হয়ে যায়। তাই আমরা যেন এসকল পাপ কাজ থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারি এবং ভবিষ্যতে বিভিন্ন পাপ কাজ থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারি তার জন্য তওবার নামাজ পড়ে আল্লাহ তায়ালার কাছে ক্ষমা প্রার্থী হতে পারেন। তবে আপনি চাইলে আল্লাহ তায়ালার কাছে ক্ষমা চাওয়ার পূর্বে তার বন্ধুদের কাছে সুপারিশ করতে পারেন।



মুক্তআঁখি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url